মোংলার পশুর নদীতে ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজ থেকে ৫ দিন পর কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে এ কয়লা উত্তোলন শুরু করে ডুবে থাকা জাহাজ এমভি বিলাসের মালিকপক্ষ। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার ওলিউল্লাহ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
কমান্ডার ওলিউল্লাহ জানান, স্থানীয় ডুবুরি প্রতিষ্ঠান হোসেন স্যালভেজের ১৫ জন ডুবুরি দিয়ে ড্রেজারের মাধ্যমে পাম্প করে এ কয়লা উত্তোলন শুরু করা হয়েছে। কয়লা উত্তোলন শেষে ডুবুরিরা ভাটার সময় কার্গো জাহাজটির তলদেশে দুই পাশ থেকে ওয়্যার (মোটা তার) টেনে দেবেন। এরপর তারা জোয়ার শুরু হলে দুই পাশে টাগবোট দিয়ে নিমজ্জিত জাহাজ এমভি বিলাসকে টেনে নদীর কিনারে নিয়ে আসবেন। তবে কয়লা উত্তোলন কাজ শেষ করতে ২-৩ দিন লেগে যাবে বলে জানান ডুবুরি দলের প্রধান মো. সোহরাব হোসেন। তিনি বলেন, জাহাজটির অধিকাংশ কয়লা পাম্প করে বলগেটে রাখা হবে। এভাবে কয়লা উত্তোলনের পর নিমজ্জিত এমভি বিলাস জাহাজটি উদ্ধার করা হবে।
এদিকে জাহাজটিতে থাকা কয়লা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সাহারা এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) লালন হাওলাদার জানান, উদ্ধার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে মালিক পক্ষের ৪০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীতে ডুবে যায় তেলবাহী ট্যাংকার এমভি ওটি সাউদার্ন স্টার সেভেন। ওই ট্যাংকারটি যেভাবে উত্তোলন করা হয়েছে ঠিক সেভাবেই উত্তোলন করা হবে কয়লাসহ নিমজ্জিত এই জাহাজটিকেও। সুন্দরবনের হারবাড়িয়া এলাকার ৬ নম্বর অ্যাংকোরেজে থাকা লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ এমভি অবজারভার ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরে আসে। জাহাজটি থেকে গত রবিবার ভোরে কয়লা নেয়া হয় ঢাকার ইস্টার্ন ক্যারিয়ার নেভিগেশনের মো. সোহেল আহম্মদের এমভি বিলাস কার্গো জাহাজে। খুলনার দুলাল এন্টারপ্রাইজের ইটভাটা ও সিরামিক কারখানাগুলোর জন্য আমদানি করা কয়লা নিয়ে তা রাজধানীর উদ্দেশে রওনা দেয়। কিছু দূর এগোলেই ডুবোচরে ধাক্কা লেগে তলা ফেটে এটি ডুবে যায়।
এ সময় কার্গোতে থাকা ৭ কর্মচারী সাঁতরে তীরে উঠে আসেন। ৭৭৫ টন কয়লা নিয়ে ডুবে যায় জাহাজটি। সুন্দরবনের মধ্যে পশুর নদীতে লাইটার জাহাজডুবির ঘটনায় পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহামুদুল হাসান জানান, সুন্দরবনের কী পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে তা নিরূপণ করতে এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মোংলা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, আমরা কার্গোডুবির ঘটনায় বন বিভাগ, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ও লাইটার কার্গো মালিকপক্ষের করা ৩টি সাধারণ ডায়েরির তদন্ত শুরু করেছি। মোংলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তুহিন মণ্ডলকে এ তদন্তের ভার দেয়া হয়েছে।