What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected অপেক্ষা (1 Viewer)

Pegasus

Member
Joined
Mar 8, 2018
Threads
103
Messages
171
Credits
28,977
-"এই উঠো আর কতো ঘুমাবে,এখন উঠো"।(অধীরা)
-"আর একটু ঘুমাই না,আজকে তো অফিস বন্ধ"।
(তুষার)
-"কিন্তু এখন তো ১০ টা বাজে।নাস্তা করবে না"।(অধীরা)
-"কি ১০ টা বাজে,তুমি আমাকে আগে ডাকোনি কেনো।
আচ্ছা আমি ফ্রেস হয়ে আসছি"।(তুষার)
"আমি তুষার আর এই হচ্ছে অধীরা আমার
বউ।ভালোবেসেই আমাদের বিয়ে হয়েছে।
এই পৃথিবীতে অধীরা ছাড়া আমার আর
আপন কেউ নেই।অধীরারও আমি ছাড়া
আর কেউ নেই।আমরা দুজন দুজনকে
অনেক ভালোবাসি।তার জন্য যে আমাদের
মাঝে ঝগড়া হয় না এমন,ঝগড়া হয় তবে
তেমন একটা না।কিছুক্ষন পর আবার সব
ঠিক হয়ে যায়।একে অপরকে ছাড়া থাকতে
পারি না।আমি অফিস থাকলেও কিছুক্ষন
পর পর ফোন দিয়ে কথা বলি"।
"আমরা এক অফিসে চাকরি করতাম।সেইখান
থেকে আমাদের পরিচয়।আমাদের মাঝে তখন
বন্ধুত্ত সম্পর্ক গড়ে উঠে।দুজন দুজনার সব কথা
শেয়ার করতাম।আসলে আমরা অনেক কষ্ট করে
আজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছি"।
"আমার বাবা-মা কে তা আমি জানি না।আমি
বড় হয়েছি অনাথ আশ্রমে।কেউ আমার সাথে
মিশতো না,সবাই আমার সাথে খারাপ ব্যবহার
করতো।সবাই সবার বাবা-মার কথা জানতো
তাই।আমি তো আমার পরিচয় জানি না"।
"এক সময় আমাকে অনাথ আশ্রম বের করে
দেয়।কারন হচ্ছে সেই দিন আমি একটা ছেলে
কে মারি।এর আগেও আমাকে অনেক মেরেছি
তাই সেই দিন আর নিজেকে আটকিয়ে রাখতে
পারিনি"।
"এখন কোথায় যাবো তার ঠিক নাই।অনেক
রাত হয়েছে কোথায় থাকবো তাও জানি না।
শেষে পার্কের বেঞ্চে ঘুমিয়ে যাই।সকালে ঘুম
থেকে উঠে কাজ খুজছি কারন কাল থেকে
কিছু খাইনি।অনেক কষ্টে একটা কাজ পেলাম"।
"ঠিক করলাম নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবো।
যেইভাবে হোক পড়াশুনা করে ভালো কিছু
করবো।তাই কাজের পাশাপাশি পড়াশুনাও
করতাম"।
"অন্য দিকে অধীরার পরিবার ছিলো এক
সময়।অধীরার মা মারা যাবার পর
অধীরার বাবা আবার বিয়ে করে।কিন্তু
সৎ মা অনেক অত্যাচার করতো অধীরার
বাবা বাসায় না থাকলে"।
"এক সময় বাবাও মারা যায়।তখন সৎ মা
বাসা থেকে বের করে দেয়।তখন অধীরা
অনার্স ৪র্থ বর্সে পড়ে।অনেক কষ্টে পড়া
লেখা শেষ করে।আমি যেই অফিসে
চাকরি করি সেই অফিসে চাকরি
হয়ে যায়"।
"প্রথম দিন আমার সাথে ভালো সম্পর্ক হয়ে
যায়।আমরা দুজন ছিলাম খুব মিশুক সহজে
মানুষের সাথে মিশতে পারতাম"।
"প্রথম দেখাতেই অধীরাকে আমার ভালো
লাগে।অধীরা দেখতে অনেক সুন্দর ছিলো।
যে দেখবে সেই পছন্দ করবে।আমার ভালো
লাগার কারন হচ্ছে অধীরার মন অনেক
ভালো।সবাই কে সহজে আপন করে
নিতে পারে"।
"আমরা প্রতিদিন অফিস শেষে আড্ডা দিতাম।
দুজনের কষ্টের কথা শেয়ার করতাম।যে গুলি
আমরা দুজন ছাড়া অন্য কেউ জানতো না।
ভালোই চলছিলো আমাদের দিন গুলি"।
"কিন্তু এক দিন অফিস যাবার পর আমি
জানতে পারলাম আমার নাকি চাকরি
চলে গেছে।কাল থেকে আমাকে অফিসে
আসতে না করে দিয়েছে।আসলে আমার
খারাপ লেগেছে যে কি কারনে আমার
চাকরি চলে গেছে সেই কারন আমাকে
জানায়নি।সেই দিন অধীরা অনেক মন
খারাপ করছিলো"।
"তার কিছু দিন অধীরার সাথে দেখা করতে
যাই।অফিসে যাবার পর জানতে পারি
অধীরারও নাকি চাকরি চলে গেছে।সেই
দিন কষ্ট পেয়েছিলাম।আর অধীরা আমাকে
জড়িয়ে ধরে সে কি কান্না করেছিলো আমি
আজও ভুলিনি।সেই দিন আমি কিছুই বলতে
পারিনি।দুজন দুজনের বাসায় চলে আসলাম"।
"অধীরাকে ফোন দিয়ে ফোনে পাচ্ছি না।বার
বার বলছে ফোন বন্ধ।আর কিছু না ভেবে
আমরা যেখানে বসে আড্ডা দিতাম সেখানে
চলে আসলাম।কিন্তু না অধীরা নেই।বাসা চিনি
না যে বাসায় যাবো।এইভাবে অনেক দিন চলে
যায় অধীরার কোন খবর নেই প্রতিদিন সেই
জায়গায় যেতাম আর ফিরে আসতাম"।
"শেষে ধরে নিলাম যে অধীরাকে আমি
হারিয়ে ফেলছি।আজ অনেক দিন পর
আমি আবার সেই জায়গায় আসলাম।
একা বসে ছিলাম আর সিগারেট টানছিলাম।
হঠাৎ কে যেন আমার পাশে এসে বসলো।
আমি আর কিছু খেয়াল না করে সিগারেট
টানতে থাকলাম।কিন্তু কিছুক্ষন পর কেউ
জিজ্ঞেস করলো এতো দিন কোথায় ছিলে।
আমি ভাবতে থাকলাম কে হতে পারে।আরে
এতো অধীরার কণ্ঠো।পাশে তাকাতেই দেখি
অধীরা"।
-"কি হলো বলবে না"?(অধীরা)
-"তুমি কোথায় ছিলে?ফোন দিয়ে ফোন বন্ধ পেয়েছি।
কতো খুঁজেছি তোমাকে তুমি জানো।প্রতিদিন এখানে
আসতাম কিন্তু তোমাকে পেতাম না।তোমার বাসা
চিনি না যে যাবো।তোমাকে না পেয়ে কিছু দিন
আর আশা হয়নি"।(তুষার)
-"আমার মন অনেক খারাপ ছিলো।কিছুই ভালো
লাগছিলো তাই আর যোগাযোগ করিনি।তারপর
এখানে আসলাম কিন্তু তোমাকে পেলাম না।আজ
দুদিন পর আবার আসলাম আর তোমাকে পেলাম।
জানো সেই দিন অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম"।(অধীরা)
-"আমি জানি।তারপর কি করছো এখন।চাকরি
পেয়েছো কোথায়"।(তুষার)
-"না এখনো পাইনি"।(অধীরা)
-"তাইলে কিভাবে চলছো তুমি মানে টাকা কোথায়
পাও কোথায়"।(তুষার)
-"আগের কিছু জমানো ছিলো তাই দিয়ে চলছি।তুমি
কি করো এখন"।(অধীরা)
-"আমি একটা অফিসে চাকরি পেয়েছি তাই করছি।
আমাদের অফিসে এক জন লোক লাগবে।তুমি চেষ্টা
করে দেখতে পারো।আর আমি জানি তুমি চাকরিটা
পাবে"।(তুষার)
"এইভাবে অনেকক্ষন কথা হলো।অধীরাকে
বাসায় দিয়ে আমি আমার বাসায় আসলাম।
ঠিক করলাম যেভাবেই হোক আমার মনের
কথা বলে দিবো।কারন একবার প্রায় হাঁড়িয়ে
ছিলাম আর হাঁড়াতে পারবো না।তাই অধীরায়ে
বলেই দিবো ঠিক করলাম"।
-"অধীরা কাল কি আমার সাথে একটু
দেখা করতে পারবে"।(তুষার)
-"হ্যাঁ,পারবো।কোথায় আসতে হবে বলো আমাকে"।
(অধীরা)
-"আমরা যেখানে সব সময় দেখা করি সেখানে
বিকেল ৫ টায়,ঠিক আছে"।(তুষার)
-"আচ্ছা ঠিক আছে।আমি সময় মতো চলে
আসবো"।(অধীরা)
"পরের দিন বিকেলে আমি একটু আগেই গেলাম।
আমি যাবার কিছুক্ষন পর অধীরা আসলো"।
-"আসতে কোন অসুবিধা হয়নি তো"।(তুষার)
-"না অসুবিধা হয়নি"।(অধীরা)
-"আসলে তোমাকে কিছু কথা বলবো তাই আসতে
বলছি।তুমি আমাকে ভুল বুঝো না"।(তুষার)
-"তোমাকে ভুল বুঝবো আমি এইটা কখনো না।
তোমার যা বলার বলতে পারো"।(অধীরা)
"অধীরাকে সব কিছু বুঝিয়ে বললাম।অধীরা
অনেক ভেবে শেষে রাজি হলো।শুরু হলো
আমাদের এক সাথে পথ চলা"।
"এই দিকে অধীরা আমাদের অফিসে
চাকরি পেয়ে যায়।এই ভাবে অনেক
দিন চলে যায়।আমরা ঠিক করলাম
যে বিয়ে করবো।অফিসের সবাই
আমাদের সম্পর্কে জানতো তাই
সবাই নিয়ে ছোট অনুষ্ঠান করে
আমরা বিয়ে করলাম।আমাদের
আপন বলতে তো আর কেউ নেই
আর আমাদের এতো টাকাও নেই
তাই ছোট অনুষ্ঠান করেছি"।
"আমাদের বাসর রাতে আমরা সারা রাত কথা
বলে কাটিয়েছি।আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা
বলেছি"।
"ভালোই চলছে আমাদের সংসার।এক সাথে
অফিসে যাওয়া আশা।ছুটির দিনে কোথাও
ঘুরতে যাওয়া।এভাবেই আমাদের সময় গুলি
ভালো যাচ্ছিলো"।
"দেখতে দেখতে ২ বছর হয়ে যায় আমাদের বিয়ের"।
-"তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে"।(অধীরা)
-"সারপ্রাইজ!আমার জন্য।তা কি বলো"।(তুষার)
-"তুমি বাবা হতে যাচ্ছো"।(অধীরা)
-"তুমি সত্যি বলছো"।(তুষার)
-"হ্যাঁ!আমি সত্যি বলছি "।(অধীরা)
-"তুমি জানো না আমি কতোটা খুশি হয়েছি।
আজকে তুমি আমার সব স্বপ্ন পূরণ করলে"।(তুষার)
-"আমি জানি তুমি অনেক খুশি হয়েছো"।(অধীরা)
-"এই দিনটির জন্য অনেক অপেক্ষা করছি"।(তুষার)
"আমি আর অধীরা ঠিক করলাম যে
অধীরা আর চাকরি করবে না।এই
অবস্থায় বিশ্রাম দরকার।আর তা
ছাড়া আমি যেই টাকা বেতন পাই
তা দিয়ে আমাদের ভালো ভাবে হয়ে
যাবে।আমাদের কিছু জমানো টাকা
আছে কোন সমস্যা হবে না"।
"আমি সব সময় অধীরা খেয়াল রাখতাম।আমি
নিজেই ঘরের সব কাজ করতাম।অফিস থেকে
এসে রান্না করতাম।অধীরাকে কাজ করতে নিষেধ
করে দিয়েছি"।
"অধীরাকে নিয়ে হসপিটালে আসছি।
আজ অপারেশন,অনেক চিন্তা হচ্ছে।
১ ঘন্টা পর ডাক্তার এসে বললো আমি
মেয়ে সন্তান এর বাবা হয়েছি।আর দুজনই
ভালো আছে"।
"আমি রুমে গিয়ে দেখলাম অধীরা আমাদের
মেয়ে কোলে আছে।আমি যাবার পর আমাকে
দিলো।দেখতে অধীরার মতো হয়েছে"।
"আমাদের মেয়ের নাম আরিসা রেখেছি।
আরিসাকে নিয়ে আমরা অনেক ভালো
আছি"।
"একটা কথা বলছি সবার জন্য।জীবনে এমন
এক জন মানুষ কে বেঁছে নিবেন যে এই ৩ টা
অনুভূতির মানে বুঝে।আপনার হাঁসির মধ্যে কষ্ট,

রাগের মধ্যে ভালোবাসা,অভাবের মধ্যে অপেক্ষা"।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top