What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected তোমার আমার প্রেম (1 Viewer)

Pegasus

Member
Joined
Mar 8, 2018
Threads
103
Messages
171
Credits
28,977
কানিজ ফাতেমা সুপ্তি।
.
নামটা শুনে আমি একটু অবাকই হলাম।অফিসে বেশ ভাল একটা পদেই আছি।কাজের চাপটাও তাই একটু বেশী।যার জন্যে একটা সহকারীর খুবই প্রয়োজন ছিল।আর সেটার জন্যেই আজকেই ইন্টার্ভিউ নেওয়া।
'
প্রায় পনেরো জনের পর এক জনকে পারফেক্ট মনে হয়েছে আমার কাছে।আমার জন্যে উনিই বেটার হবে।মনে মনে ঠিকও করে ফেলেছি যে দায়িত্বটা ওনাকেই দেবো।আমি ওনার রেখে যাওয়া কাগজগুলা আবার একটু দেখছিলাম।এর মধ্যে যে পরের জন চলে এসেছে সেদিকে খেয়ালই নেই।
'
আমার পাশে ছিলেন আরও দুজন।তাদের সাথে আমার বেশ ভাল একটা সম্পর্ক।আমি কাগজ দেখছিলাম তখনি পাশের জন বললো,
-আপনার নাম?
-কানিজ ফাতেমা সুপ্তি।
নামটা শুনে আমি বেশ ভালই অবাক হলাম।তার চেয়ে একটু বেশীই অবাক হলাম নাম বলা মেয়েটাকে দেখে।আমি মাথা তুলে তাকিয়ে দেখি সামনের চেয়ারটাতে সুপ্তি বসে।
ও হয়তো এখনও আমাকে খেয়াল করেনি।মেয়েটা আগের থেকে অনেকটাই সুন্দরী হয়ে গেছে।তবে ওর মুখে আমি স্পষ্টই ভয়ের ছাপ দেখতে পেলাম।আমি বললাম,
-কেমন আছেন?
আমার কথায় সুপ্তি আমার দিকে তাকালো।তবে আমি ওর তাকানো দেখে ঠিকই বুঝতে পেরেছিলাম যে আমার থেকে ওই বেশী অবাক হয়েছে এখানে আমাকে দেখে।
আমি এবার আমার পাশে বসা স্যারের কানের কাছে মুখটা নিয়ে বললাম,
-এনার ইন্টার্ভিউটা আমিই নিতে চাই।আর বাইরে যেগুলা আছে সেগুলা আপনি সামলান।তবে চাকরিটা কিন্তু এই মেয়েটাই পাবে।
আমার কথায় স্যার আমার দিকে কেমন করে যেন তাকালো।তবে একটু পর মুচকি হেসে সুপ্তিকে বললো,
-আপনি ওনার সাথে ওনার কেবিনে যান।
আমি উঠতেই স্যার সুপ্তির দিকে তাকিয়ে বললেন,
-চাকরিটা মনে হচ্ছে পেয়েই গেলেন।
আমি আর কিছু না বলে আমার কেবিনে চলে আসলাম।সাথে সুপ্তিও।
"
সুপ্তির সাথে আমার পরিচয় ভার্সিটিতে। আমার ফ্রেন্ডের মামাতো বোন।আমাদের থেকে দু বছরের জুনিয়র ছিল।
মেয়েটাকে প্রথম দেখাতেই কেমন যেন ভাল লেগে গিয়েছিল।ওর মুখের দিকে তাকালে কেমন যেন সবকিছু ভুলে যেতাম।মুগ্ধতায় ডুবে থাকতাম সবসময়।
তবে বন্ধুর জন্যে কিছু বলতে পারিনা।হয়তো ও জানলে কষ্ট পাবে এটা ভেবে আর বলা হয়ে ওঠেনি।
"
আহাদ ভাইয়া আপনি এখানে?
'
এই রে ধরা পড়ে গেলাম।সুপ্তিকে দেখতে ওদের ক্লাসের সামনে এসেছিলাম।তখনি মেয়েটা রুম থেকে বের হলো।আমি লুকানোর চেষ্টা করলেও মেয়েটার চোখে ঠিকই ধরা পড়ে গেলাম।


"
আমি সুপ্তির দিকে এগিয়ে গিয়ে বললাম,
-আসলে এইতো ক্লাসে যাচ্ছিলাম।
আমার কথায় মেয়েটা আমার দিকে কেমন করে যেন তাকালো।কিছু ভুল বললাম নাকি।সুপ্তি এবার কি যেন ভেবে বললো,
-আপনার ক্লাস তো ওইদিকে।
এবার পুরোটাই ধরা পড়ে গেলাম।সুপ্তি আমার অবস্থা বুঝতে পেড়ে মুচকি হেসে বললো,
-মিথ্যেটাও ঠিকভাবে বলতে পারেন।
-আসলে হয়েছে কি.....
-আর মিথ্যে বলতে হবে না।চলুন ওদিকটায় গিয়ে বসি।
-হুম চলো।
মেয়েটা কি বুঝে গেলো নাকি যে আমি ওকে দেখতেই এখানে এসেছি।বুঝলে বুঝুক।ওকে তো দেখতে পেয়েছি এটাই অনেক।
"
বেশ ভালই চলছিল বন্ধুর চোখ ফাকি দিয়ে সুপ্তির সাথে সময় কাটানো।ক্লাস শেষে ঘুরতে যাওয়া,গল্প করা,খাওয়া,আর সুপ্তিকে বাসায় পৌছে দেওয়া ছিল আমার রোজকার রুটিন।
তারপর রাতভর তো ফোনে কথা চলতোই।তবে ওকে ভালবাসি বলতে কেমন যেন পা কাপতো।আমার পা কাপা থামেও নি,সুপ্তিকে ভালবাসি বলাও হয়নি।
"
সুপ্তিকে ভালবাসিস?
'
আজ ক্লাস শেষে বের হতেই নিলয় কথাটি বললো।নিলয়ই আমার সেই বন্ধু।আআর সুপ্তির ভাই।আমি নিলয়ের কথার কোন উত্তর দিলাম না।ও কি সবকিছু জেনে গেছে।
কিন্তু কিভাবে সম্ভব।আমি কিছু বলার আগেই নিলয় বললো,
-ফুফু ফোন দিয়েছিল।সুপ্তির বিয়ের জন্যে একটা ছেলে দেখেছিল।কিন্তু ও সরাসরি তোর নামই বলে দিয়েছে।
নিলয়ের কথায় আমি এবার একটু বেশীই অবাক হলাম।তার মানে সুপ্তি সবকিছু বলে দিয়েছে।নিলয় বললো,
-ভালবাসিস ওকে?
আমি মাথা নিচু করে বললাম,
-হুম ভালবাসি।
আমি অপেক্ষা করছিলাম নিলয়ের রিএকশন দেখার।আজ আমাদের বন্ধুত্বটা শেষ হয়ে গেলো।আমি কিছু বলার আগেই নিলয় আমার কাধে হাত রেখে বললো,
-মেয়েটা বেশ ভাল।কখনও কষ্ট দিস না।
নিলয়ের কথায় আমি কিছু বলতে পারলাম না।ওকে একটু শক্ত করেই জড়িয়ে ধরলাম।হাজার হোক শালাবাবু বলে কথা।
"
এরপর থেকে বেশ ভালই চলছিল।এখন আর লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করতে হয় না।ভালবাসি বলতে এখন আমারও পা কাপে না।তবে সবকিছু সবার কপালে যে নেও এইটা খুব ভালভাবেই বুঝে গেলাম।তখন আমি ফাইনাল ইয়ারে।একদিন সুপ্তিকে বাসায় পৌছে দিয়ে আমিও বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
'
এটাই যে সুপ্তির সাথে আমার শেষ দেখা হবে এইটা বুঝতে পারিনি।নিলয়ের কাছে শুনেছিলাম সুপ্তির বাবা আমাকে একদমই পছন্দ করতেন না।তাই বাসাটা ছেড়ে দিয়ে কোথায় চলে গেছে কেও বলতে পারেনি।মেয়েটাকে অনেক খুজেছি কিন্তু পাইনি।আজ এততদিন পর ওকে পেয়ে আর হারাতে চাইনা।কিন্তু মনের মাঝে একটা প্রশ্ন ঠিকই রয়ে গেলো।ও কি বিয়ে করেছে।
"

সেদিন কেন চলে গিয়েছিলে?
'
আমার কথায় সুপ্তি কিছু বললো না।সেই আগের মতই মাথা নিচু করে রইলো।আমি এবার চেয়ার থেকে উঠে সুপ্তির পাশে গিয়ে দাড়ালাম।
আমি সুপ্তির মাথাটা তুলতেই দেখি মেয়েটার চোখে পানি।আমি সুপ্তির চোখের পানিটুকু মুছে বললাম,
-কথা বলবেনা আমার সাথে?
সুপ্তি এবার আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
-সেদিন বাসায় যাওয়ার পর তোমাকে নিয়ে বাসায় বেশ রাগারাগি করি আমি।তারা তোমাকে একদমই পছন্দ করে না।তাই সেদিন আমাকে জোর করেই অন্য শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।তোমার সাথে যোগাযোগও করতে পারিনি।

এটুকু বলেই সুপ্তি থেমে গেলো।আমি কিছু বলার আগেই সুপ্তি বললো,
-কিছুদিন আগে বাবা মারা গেছে।মা কে নিয়ে আবার চলে এসেছি এখানে।তাই জবটা খুব দরকার।
কথাটি বলেই মেয়েটা কেঁদে দিল।আমি এবার সুপ্তিকে বললাম,
-বিয়ে করেছো?
ও মাথা নাড়িয়ে বললো,
-একজনকে ভালবেসেছিলাম তারপর আর কাউকে সেই জায়গায় নিতে পারিনি।
তার মানে সুপ্তি এখনও বিয়ে করেনি।শুনেই কেমন যেন ভাললাগা বয়ে গেলো।আমি সুপ্তিকে বললাম,
-সরি এই পোষ্টে অন্য একজনের চাকরি হয়ে গেছে।
আমার কথায় সুপ্তি আমার দিকে কেমন করে যেন তাকালো।ও হয়তো আমার কাছে এই কথাটা আশা করেনি।
সুপ্তি এবার কাপা গলায় বললো,
-ও আচ্ছা।তাহলে আসি।
কথাটি বলেই সুপ্তি চলে যাওয়ার জন্যে ঘুরতেই পেছন থেকে ওর হাতটা শক্ত করে ধরে আমার কাছে এনে বললাম,
-তবে একটা পোষ্ট ফাকা আছে।
-কি।বলো আমি চাকরিটা ছোট হলেও করবো।
আমি এবার সুপ্তির কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম,
-আমার বউয়ের পোষ্টটা এখনও খালি পড়ে আছে।আমি চাই তুমি এই পোষ্টটাতে জয়েন করো।
আমি সুপ্তিকে কিছু বলতে না দিয়ে আবারও বললাম,
-আমরা কালকেই বিয়ে করবো।এখন যাও বাসায় যাও।আর সব দায়িত্ব আমার উপর ছেড়ে দাও।
আমার কথায় সুপ্তি কিছু বলতে পারলো না।আমি ওর চোখের পানি মুছে দিয়ে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বললাম,
-ড্রায়ভার কে বলে দিচ্ছি তোমাকে নামিয়ে দিতে।
সুপ্তি এবার ছোট্ট করে বললো,
-হুম।
"
সুপ্তি অফিস থেকে বের হতেই নিজেকে যেন কেমন একা একা মনে হলো।মনে হচ্ছে আমি আবারও সুপ্তিকে হারিয়ে ফেলতেছি।আমি আর দাড়ালাম না।দৌড়ে নিচে নামতেই দেখি সুপ্তি গাড়িতে চেপে বসলো।
আমিও একটু তাড়াতাড়িই সুপ্তির পাশে গিয়েয়ে বসতেই মেয়েটা অবাক চোখেই আমার দিকে তাকালো।আমি হাপাতে হাপাতে সুপ্তিকে বললাম,
-আমি আর তোমাকে হারাতে চাই না।ড্রায়ভারকে বললাম কাজি অফিসের দিকে যেতে।
'
আমার কথা শুনে মেয়েটা মুচকি হেসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আমি সুপ্তির কপালে আলতো করে চুমু একে দিয়ে বললাম,অবশেষে পাইলাম, আমি উহাকেই পাইলাম।

 

Users who are viewing this thread

Back
Top