What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

পাষাণ হৃদয় (1 Viewer)

arn43

Co-Admin
Staff member
Co-Admin
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,574
Messages
119,143
Credits
374,357
Computer
Glasses sunglasses
Compass
Compass
Camera photo
Logitech Mouse
পাষাণহৃদয়

পৃথিবীর এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে অধিকাংশ মানুষই নিজের স্বার্থও লাভ-লোকসানের চিন্তা করে। এলাভ-লোকসানের হিসাব কষতে গিয়ে কখনও সে নিজের স্বজনকে ত্যাগ করে কিংবা আপনজনকে হত্যা ও করে ফেলে। স্বার্থান্ধ মানুষ কেবল নিজের দিকটাকে বড় করে দেখে; অপরের বিষয়টা ভাবেনা। অথচ মানুষ হিসাবে একে অন্যের জন্য কাজ করার কথা, পরস্পরের জন্য ত্যাগ করার কথা, নিজের ক্ষতি স্বীকার করেও পরোপকারে আত্মনিয়োগ করার কথা। কিন্তু স্বার্থান্ধ মানুষের কাছে এসব কেবল নীতিবাক্য। এসব বলার কথা, শোনার কথা, মানার জন্য নয়। মানুষ এগুলি আমল করলে এসমাজ সুন্দর সমাজে পরিণত হ'ত। অথচ স্বার্থপরতা মানুষকে পাষাণ হৃদয় করে ফেলে। মানুষের স্বাভাবিক মানবতা তার মধ্যে থাকে না। শত প্রচেষ্টায়ও তার হৃদয়ের কঠিন পাথরকে নরম করা যায় না; তার মন গলানো যায়না। এখানে পাষাণ হৃদয় সম্পর্কে একটি গল্প বলতে চাই।
সুমি ধনাঢ্য পিতার আদরের দুলালী। কি নেই তার? যেমন চেহারা, তেমনি স্বাস্থ্য। শিক্ষা-দীক্ষায়, চাল-চলনে চরিত্র-মাধুর্যে আর দশটা মেয়ের চেয়ে সে ভিন্ন। উচ্চশিক্ষার অহংকার তার মাঝে নেই, পিতার অঢেল সম্পদের গর্বও তাকে কখনও কেউ করতে দেখেনি। ব্যস্ততম শহরের আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে বেড়ে উঠেছে সে; কিন্তু তার মাঝে কোন উচ্ছৃংখলতা নেই, নেই বেলেল্লাপনা। এক কথায় কমনীয় চেহারার অতুলনীয় ভদ্র-শালীন মেয়ে সুমি। যে কেউ দেখলে তাকে একবাক্যে পসন্দ করবে। অথচ তার এই গুণাবলী সকলের মন জয় করতে পারলেও তার স্বামীকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। পিতা অনেক আশা করে চোখের পুঁতলি, নয়নের মণি মেয়েকে কাছে রাখবেন বলে বাড়ীর পাশে বিবাহ দেন। মেয়ের সাথে তার পরিবারে প্রয়োজনী সবই তিনি দেন। কনের গাড়ীর সাথে ট্রাক ভর্তি করে সব জিনিস যায় বরের বাড়ী। বর-কনের রুম সজ্জিত হয় কনের পিতার দেওয়া খাট, সোফা, আলমারী সহ অন্যান্য আসবাব পত্রে। পিতার দেওয়া উপহার সামগ্রীতে বরের বাড়ী সজ্জিত হ'লেও সুমির নিজের জীবনটা সাজানো হ'লনা। সে জীবনটাকে রাঙাতে পারলনা নিজের মত করে। আলাপ-পরিচয়ের পূর্বেই অর্থাৎ বিয়ের পরের দিনই সুমির স্বামী প্রবাসী হয় ইউরো-ডলারের লোভে। প্রাণপ্রিয় স্বামী প্রবাসী হওয়ার পর একযুগ কেটে গেছে, সুমির খবর সে নেয়নি। সুমি কেবল স্বামীর ভালবাসা লাভের মানসে ৪টি বছর শয্যাশায়ী শ্বশুরের অকৃত্রিম সেবা-শুশ্রূষা করে। এক যুগ ধরে স্বামীর অপেক্ষায় থাকে সে। হয়তো স্বামী একদিন এসে তাকে আদরে-সোহাগে নিজের করে নেবে। কিন্তু তার সে স্বপ্ন পূরণ হয়না, তার ধারণা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এক সময় জানিয়ে দেয় যে, আমাকে স্বামী হিসাবে পাওয়ার কোন আশা বা চেষ্টা কোনটাই তুমি করনা। একথা শুনে সুমি যেন আকাশ থেকে পড়লো। চোখের জলে বুক ভাসাল সে। পানাহার ছেড়ে দিল। স্বামীর এহেন আচরণের কথা সে ভুলতে পারেনা। তার কানে ঐকথাটিই যেন বারবার অনুরণিত হয়। এটাকে সে দূর করতে পারেনা। এথেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজে পায়না। অবশেষে সে এদুঃস্বপ্নের কবল থেকে মুক্তির জন্য বেছে নেয় সিডাক্সিন (ঘুমেরবড়ি)। সারাদিন ঘুমের বড়ি খেয়ে পড়ে থাকে। কিন্তু যখন ঘুম ভেঙ্গে যায়, ঐকথা আবার তার মনে পড়ে যায়, তখন সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। সে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরিবারের অন্যদের সতর্ক দৃষ্টির কারণে সেটাও হয়ে ওঠেনা। এরই মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ অবলম্বন পিতা মারা যান, এর অব্যবহিত পরে মারা যান বড় ভাইও। এমনি এক দুঃখের সাগরে ভাসতে থাকে সুমি। জীবন তার কাছে হয়ে ওঠে বিতৃষ্ণ। কিন্তু কি করবে সে?
 

Users who are viewing this thread

Back
Top