What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected একটি নাম বিহীন গল্প (1 Viewer)

Pegasus

Member
Joined
Mar 8, 2018
Threads
103
Messages
171
Credits
28,977
সাইফুল চোখ বড় বড় করে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে । নিজের বর্তমান অবস্থা তার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না । এমনটা কিছুতেই হতে পারে না । সাইফুলের বারবার মনে হচ্ছে ও কোন দুঃস্বপ্ন দেখছে । সামনে জ্বলতে থাকা আগুনের কুণ্ডুলির দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে । তবে আগুনের ভেতরে গরম হতে থাকা লোহার শিকটার দিকে সাইফুলের দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়ে আছে । ওটা দিতে একটু আগেই ওর সাথে কি করা হয়েছে সেটা ও মনেও করতে চায় না । জোর করে ভাবনাটা দুর করে দিতে চাইলো কিন্তু তীব্র যন্ত্রনাটা দুর করতে পারলো না।
হঠাৎ সাইফুলের খুব পানি খেতে ইচ্ছে হল । সাইফুল শুনেছে সব থেকে নিষ্ঠুর মানুষটাও নাকি পানির কথা বললে না বলে না । কিন্তু সামনের মানুষটা কি ওকে একটু পানি খেতে দিবে? একটু নড়াচড়া করতে চেষ্টা করলো কিন্তু কোন লাভ হল না । ওর হাত আর পা শক্ত করে বেঁধে রাখা হয়েছে । মুখের ভেতরে এক দলা কাপড় দিয়ে তারপর মেডিক্যাল টেপ দিয়ে মুখটা শক্ত করে পেঁচিয়ে রেখেছে সামনের মানুষটা । একটু আগে যখন ঐ গরম লোহার শিকটা দিয়ে ওর গোপন অঙ্গে ছ্যাক দিল লোকটা, সাইফুল মুখ দিয়ে একটা শব্দও করতে পারলো না । তীব্র একটা চিৎকার বেরিয়ে এসে গলা পর্যন্তই আটকে থাকলো। এখন কিভাবে পানি চাইবে !
সাইফুল একটু নড়ার চেষ্টা করলো । সামনে বসা মানুষটার দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করলো কিন্তু কোন লাভ হল না । সে একভাবে আগুনের দিকে তাকিয়ে আছে । মাঝে মাঝে আগুনের মধ্যে কেরোসিন দিয়ে সেটা উস্কে দিচ্ছে । সাইফুল সেদিকে ভীত চোখে তাকিয়ে আছে । লোহার শিকটা আবার গরম হলে সেটা দিয়ে সামনে বসা মানুষটা কি করবে সেটা বুঝতে সাইফুলের কষ্ট হচ্ছে না । তীব্র একটা আতঙ্কে পেয়ে বসেছে । কিন্তু বুঝতে পারছে না সামনের মানুষটার সাথে তার কিসের এতো শত্রুতা ! সাইফুল কোন দিন তাকে দেখেছে বলে মনেও পড়ে না । তাহলে ওর সাথে এই কাজটা কেন করছে সে ?

দুই
==
সলিম আহমেদ চিন্তিত হয়ে পায়চারি করছে । একটু পরেই আযান দেওয়ার কথা । এই এতোটা সময় তিনি একটা বারের জন্যও স্থির হয়ে বসতে পারেন নি । কি করবে কিছুই বুঝতে পারছেন না । তার যত যোগাযোগ আছে সবার সাথে যোগাযোগ করেছেন, তার সমস্ত শক্তি লাগিয়ে দিয়েছেন তবুও এখনও পর্যন্ত কোন খবর আসে নি । তার ছেলের কোন খোজ পাওয়া যায় নি । এমন কিভাবে হল !
বলতে বলতেই ফোন বেজে উঠলো । নম্বরের দিকে তাকিয়ে দেখেন ওসি সাহেব ফোন দিয়েছেন,
-কিছু পেলেন ?
-এখনও না । আমরা পুরো এলাকা চষে বেরিয়েছি কিন্তু রাফিকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না ।
ওসি সাহেব কিছুটা সময় চুপ করে থেকে বললেন
-ম্যাডামের কি অবস্থা ?
সলিম আহমেদের মনে হল ওসি সাহেব কে কিছু বলে কিন্তু সেটা আর বলল না । ফোন রেখে দিলেন । উনি নিজেও কম চেষ্টা করে কি কিন্তু ছেলের কোন খোজই পাওয়া যাচ্ছে না । কিভাবে একটা মানুষ এতোটুকু সময়ের মাঝেই গায়েব হয়ে গেল । এটা কিভাবে সম্ভব ?
সলিম আহমেদ এলাকার বিশিষ্টি ব্যবসায়ী । এক নামে এলাকার সবাই তাকে চেনে । তার উপর তার স্ত্রী হচ্ছে ক্ষমতাশীন দলের এমএলএ । এলাকাতে তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি অন্য রকম । সরকারি বেসরকারি সব লোকজন তাদের কে তমিজ করে চলে ।
গতকাল সন্ধ্যায় তার বাসাতে তার স্ত্রীর কাছে একজন লোক দেখা করতে এসেছিলো । সাধারনত স্ত্রীর মিটিং গুলোতে সে থাকে না কিন্তু আজকে তার স্ত্রীই তাকে থাকতে বলল । কথাটা ছিল তার ছেলের ব্যাপারে । ক্ষমতাসীন দলের নেতার ছেলের সে । তার এলাকাতে তার দাপট ছিল অন্য রকম । যখন যা ইচ্ছে, তাই করে বেরাতো । কদিন আগে এক মেয়েকে তুলে নিয়ে এসেছিলো । পরে যখন সেই মেয়ে তার নামে ধর্ষনের মামলা করে দিল তাকে আবারও ধরে আনা হয় । এবার সাক্ষী রাখা হয় নি । একেবারে মেয়েই ফেলে সে । যদিও এদিকটা সামলাতে খুব একটা ঝামেলা হয় নি তবুও সলিম সাহেবের মনে হয়েছে যে ছেলে একটু বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলছে । তাকে সামলানো দরকার ।
কিন্তু সেই লোকটা বলল অন্য কথা । গত কদিন থেকে পুরো দেশে কিছু খুন হচ্ছে । খুন গুলো হচ্ছে ভয়ানক ভাবে । ভিটটিমকে ভয়ানক কষ্ট দিয়ে মারা হচ্ছে । সর্ব শেষ সাইফুল নামের লোককে । রাতের আধারে সাইফুলকে শহরের চৌরাস্তার পাশে একটা কারেন্টের থামে সাথে ঝুলিয়ে রাখে কেউ । কিন্তু তাকে হত্যা করা হয়েছে আরও আগে । পুরো শরীর আঘাতে চিহ্ন । শরীর প্রায় সব হাড় ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে । আর সব থেকে ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে সাইফুলের পরিপাক ছিদ্র দিয়ে একটা রডের শিক ঢোকানো ছিল । পরীক্ষা করে দেখা গেছে যখন এটা সাইফুলের পেছন দিয়ে সেটা ঢোকানো হয়েছে তখন সেটা উৎতপ্ত ছিল ।
সলিম আহমেদ কথাটা চিন্তা করতেই শিউরে উঠলেন । তিনি বুঝতে পারছিলেন না এসব কথা তাদেরকে শোনানোর মানে কি!
কিন্তু লোকটা তারপর যা বলল তা শুনে সলিম আহমেদ চমকে উঠলো । লোকটা বলল যে সব গুলো খুন হওয়া লোক গুলোর মাঝে একটা ব্যাপার কমন, তারা সবাই ছিল রেপ কেসের আসামী । বিশেষ করে ৫-১৫ বছরের শিশুদের ধর্ষন করেছিল । কেউ বা পালিয়ে ছিল, জামিনে ছিল কিংবা প্রমানের অবাবে খালাস পেয়েছে । এরাই হচ্ছে টার্গেট । কে বা কারা এই কাজটা করছে কেউ বলতে পারছে না । কিন্তু কাজ গুলো হচ্ছে খুব নিখুত ভাবে । পুলিশ কোন ট্রেশ করতে পারছে না ।
সলিম আহমেদের কাছে এবার সব পরিস্কার হয়ে গেল । তার ছেলেও যে এমন কিছু করেছে সেটা বুঝতে কষ্ট হল না । তার স্ত্রী বলল ছেলেকে তিনি বাইরে পাঠিয়ে দিবেন । কিন্তু যতদিন বাইরে না পাঠানো হচ্ছে ততদিন তাকে বাইরে রাখা নিরাপদ নয় কোন ভাবেই । তার থেকে তাকে পুলিশের কাছে আত্ম সমর্পন করানো হোক । তারপর সেখান থেকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে ।
সেই পরিকল্পনা মতেই তাকে রাতের বেলা পুলিশের কাছে পাঠানো হচ্ছিলো । কিন্তু তার ছেলে সেই পুলিশের কাছে পৌছাই নি । পুরো রাত ধরে পুরো এলাকা চষে বেড়ালোপুলিশ এবং তার লোকজন কিন্তু তার ছেলেকে কোথাও খুজে পাওয়া গেল না । সে যে গাড়িতে করে যাচ্ছিলো সেটা পাওয়া গেল শহর থেকে একটু দুরে । সেখানে তাদের ড্রাইভার ছিল বেহুশ হয়ে । তার মাথায় কেউ শক্ত কিছু দিয়ে বাড়ি দিয়ে অজ্ঞান করে তাদের ছেলেকে নিয়ে গেছে ।
এই খবর সলিম আহমেদ খুব বেশি বিচলিত হয়ে পড়েছেন । কিছুতেই শান্তি পাচ্ছেন না । কিন্তু তার স্ত্রী একদম বিছানায় পড়ে গেছেন ।
পরদিনও গেল একই ভাবে । গতকাল তো কেবল নিজ এলাকা এবং তার আশে পাশে খোজ খবর চালানো হয়েছে এবার সেটা বাড়ানো হচ্ছে আরও । কিন্তু কোন লাভ হল না । তার ছেলে যেন একেবারে গায়েব হয়ে গেল । কেউ কোন খোজ খবর করতে পারছে না । সলিম আহমেদ কোন কিছু ভাবতে পারছে না । তিনি খানিকটা সেই মেয়েটির বাবার অবস্থা চিন্তা করতে পারছে । সেই মেয়েটিকে যখন তার ছেলে তুলে নিয়ে এসেছিলো তখন নিশ্চয় সেই এমন ভাবে দুয়ারে দুয়ারে ছুটে বেরিয়েছিলো কিন্তু কেউ তাকে সাহায্য করে নি । একজন বাবার জন্য এটা কত তীব্র কষ্টের সেটা বুঝতে বাকি রইলোনা সলিম আহমেদের ।
ঠিক সাত দিন পরে সলিম আহমেদ তার ছেলের খোজ পেলেন । তাও একটা ইউউিউব ভিডিওর মাধ্যমে । ভিডিওটা প্রায় ৩ লক্ষ্যবার দেখে হয়ে গেছে আপলোডের পরপরই ।একজন তার চ্যানেলে ভিডিওটি আপলোড করেছে । ভিডিও দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে তার ক্যামেরাটা মোবাইলে ভিডিওটা করেছে । সেখানে দেখানো হচ্ছে একটা নগ্ন ছেলেকে রাস্তা দিয়ে হাটানো হচ্ছে । তার গলাতে একটা সাইনবোর্ড টাঙ্গানো সেখানে লেখা ধর্ষক ! তার তার গোপন অঙ্গটার সাথে শক্ত করে দড়ি দিয়ে বেঁধে একটা ইট ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে । যদিও সে অংশ টুকু ব্লার করে দেওয়া হয়েছে । সে হাটছে অতি কষ্টে । মানুষজন আশে ছুটছে । কেউ চড় থাপ্পড় মারছে কেউ আবার ইট ছুড়ে মারছে ।
সলিম আহমেদ কেবল হতভম্ভ হয়ে তাকিয়ে রইলো ভিডিওটার দিকে । ভিডিওর ছেলেটা যে তার নিজের ছেলে সেটা বুঝতে তার মোটেই কষ্ট হল না ।
পরিশিষ্টঃ
=====
সলিম আহমেদের আরও ঘন্টা খানেক লাগলো তার ছেলে কোথায় আছে সেটা বের করতে । সে আছে দেশের অন্য এক প্রান্তে । কেউ তাকে ঐ অবস্থায় রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে যায় । স্থানীয় পুলিশ জনতার কাছ থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতাপে ভর্তি করে । এবং তারপর তাকে রাজধানীর দিকে পাঠানো হয় ।
সলিম আহমেদ নিজের গাড়িতে করেই রাজধানীর দিকে রওনা দিলেন । তার মা আসতে পারে নি কারন ছেলের এই অবস্থা দেখে বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে । তাকে স্থানীয় হাসতাপেল ভর্তি করা হয়েছে । ঘুমের ঔষধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে ।
গাড়ি চলতে চলতে যখন ফেরি ঘাটে এসে থামলো তিনি একটু বাইরে বের হলেন । সামনে লম্বা গাড়ির লাইন তবে তাকে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হল না । আবার যখন গাড়িতে এসে হাজির হল তখন লক্ষ্য করলেন যে তার সিটের পাশে একটা নীল খাম পড়ে আছে । খানিকটা কৌতুহল নিয়েই তিনি খাম টা তুলে ধরলেন । তিনি যখন বের হয়েছিলেন তখন এটা এখানে ছিল না ।
ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করেও কোন লাভ হল না । সেও বলতে পারলো না খামটা কিভাবে এল । খামটা খুলে দেখলেন কয়েকটা লাইন লেখা সেখানে !
"নিজের কুলাঙ্গার ছেলের কৃত কর্মের শাস্তির ব্যবস্থা কর নয়তো পরের বার তার পরিণতি অন্য ধর্ষকের মতই হবে"
সলিম আহমেদ একটা তীব্র ক্রোধ অনুভব করলো । এই এতো সময়ের মাঝে কেবল এই প্রথম তিনি ছেলের দুষ্চিন্তা ফেলে রাগ অনুভব করল । কিন্তু সে জানে তার এই নিস্ফল রাগের কোন মূল্য নেই । নিশ্চয়ই ঐ মেয়েটার বাবারও তার এবং তার ছেলের উপর এমন রাগ হয়েছিল । কিন্তু সে কিছুই করতে পারে নি । তিনিও হয়তো কিছুই করতে পারবে না । হয়তো কোন দিন খুজেও পাবে না কে করেছে তার এই ছেলের এই পরিণতি !
==============

 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top