What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে ১৬ দফার ঢাকা ঘোষণা (1 Viewer)

Status
Not open for further replies.

Nirjonmela

Administrator
Staff member
Administrator
Joined
Mar 1, 2018
Threads
2,762
Messages
23,230
Credits
813,578
Pistol
Crown
Thread Title Style (One)
Profile Music
PKeYqBK.jpg


রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে সুস্পষ্ট ঘোষণা চেয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ৭ দফা প্রস্তাবনা এবং ১৬ দফা সম্বলিত 'ঢাকা ঘোষণা' দেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে 'রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট: টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে' শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিয়ে আয়োজিত এ সম্মেলনে দুই দিনের আলোচনায়, দেশী-বিদেশী মানবাধিকার দলিল, আইন, গবেষণা ও বিভিন্ন পর্যালোনার উপর ভিত্তি করে 'ঢাকা ঘোষণা' আসে।

ঘোষণাপত্রটি বাংলাদেশ সরকার, মিয়ানমার সরকার, জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন দেশের সরকার, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ সব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছে পাঠানো হবে। যাতে দ্রুত রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হয়।

এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনটির আয়োজন করেছে একশন এইড বাংলাদেশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।

৭ দফা প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে গণহত্যা/ জাতিগত নিধন/ মানবতাবিরোধী অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা এবং বিচারের মুখোমুখি করা, রোহিঙ্গাদের যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের স্বীকৃতি দেওয়া, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যারা রোহিঙ্গা ট্রাজেডি থেকে মুনাফা ভোগ করে তাদের চিহ্নিত করে জবাবদিহি করা প্রভৃতি।

রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের লক্ষে প্রণীত ঢাকা ঘোষণা'র উল্লেখযোগ্য দিকগুলো হচ্ছে, গ্লোবাল সামিট-২০০৫ প্রতিশ্রুতি এবং জাতিসংঘের চার্টার অনুসারে গণহত্যা, গণ-দেশান্তরের মত পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের সুস্পষ্ট ঘোষণা এবং বাংলাদেশ যে ১.০৪ মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তার সীমানায় আশ্রয় দিয়েছে সে বিষয়টির স্বীকৃতি দাবি।

ইন্দো-চীন শরণার্থী সংকট নিয়ে ১৯৮৯ সালের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ঘোঘণা এবং কর্মপরিকল্পনার আন্তর্জাতিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে; দেশগুলোর এমন পরষ্পর সংযুক্ত অঙ্গীকার এবং যুগপথ রাজনৈতিক, মানবিক এবং আইনগত পদক্ষেপের দাবি।

২০১৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত নিউইয়র্ক ডিক্লারেশন অ্যান্ড কম্প্রিহেনসিভ রিফিউজি রেসপন্স ফ্রেমওয়ার্কের বাস্তবায়ন। রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিতে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সদস্যদের যথাযথ কূটনৈতিক চ্যানেলগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত মানবিক এবং অন্যান্য সহায়তার আহ্বান।

রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত যাবার অধিকারের স্বীকৃতি এবং তাদের স্বপ্রণোদিত, সম্মানজনক, সর্বজন স্বীকৃত এবং নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান।

মিয়ানমারে চলমান গণহত্যা, গণসহিংসতা, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং জাতিগত নিধনের ঘটনা ব্যাপক ও গভীরভাবে তদন্ত এবং দায়ীদের বিচারসহ রোহিঙ্গাদের আরও ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দাবি। রোহিঙ্গাদের সব ধরনের নাগরিক অধিকার এবং মর্যাদা পুনরুদ্ধার এবং রক্ষায় মিয়ানমারের দায়িত্বের ওপর জোর দেওয়া।

বাংলাদেশের অবদানের স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে ঘোষণার ১২ দফায় বলা হয়, বাংলাদেশীদের অবদান এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কারণে বাংলাদেশীদের ওপর যে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত এবং তাদের জীবন-জীবিকায় যে প্রভাব পড়েছে তার স্বীকৃতি দিতে হবে।

এছাড়া মিয়ানমার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের এই ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়গুলো বিবেচনার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ডকুমেন্ট তৈরির দাবি জানিয়ে ঘোষণার ১৫ দফায় বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নির্যাতনের ঘটনার পরিকল্পনা ও প্রমাণ সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে সাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে ডকুমেন্ট তৈরির জন্য মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত এর প্রস্তাবনার সমর্থন জানাচ্ছি এবং তা বাস্তবায়নের জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

সর্বশেষ দফায় 'ঢাকা ঘোষণা'র বিষয়বস্তু নিয়মিত পর্যালোচনা এবং বাস্তবায়নের জন্য প্রতিশ্রতিবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার করা হয়।

ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমিয়াজ আহমেদ।

ঘোষণাপত্রের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেন, "মিয়ানমার আন্তর্জাতিক নীতি অনুসারে কাজ করছে না বলেই মূলত সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে এই সমস্যা আমাদের কারণে তৈরি হয়নি। তাই সমাধানও শুধু আমরা করতে পারবো না। যেখান থেকে সমস্যার উৎপত্তি হয়েছে সেখান থেকেই সমাধান সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটা বিশাল অংশের সঙ্গে আমি কথা বলেছি, তারা প্রত্যেকেই দেশে ফেরত যেতে চায়। তারা আমাকে বলেছেন, এর আগে তিনবার বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছি, এটা চতুর্থবার। আমরা দেশে ফেরত যেতে চাই। কিন্তু আমাদের একমাত্র শর্ত মানুষ নিরাপত্তা। মানুষ হিসেবে আমাদের মেনে নেওয়া এবং নাগরিক সুবিধা দেওয়া।

গওহর রিজভী অারো বলেন, মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গাদের অধিকার। তবে আন্তর্জাতিক চাপ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়া কোনভাবেই মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে না। কারণ মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ নয়।

তাই মিয়ানমার যে রোহিঙ্গাদের উপর নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছে এবং তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করেছে এটা প্রমাণ করতে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগের সেশনে যুক্তরাজ্যে বার্মিজ রোহিঙ্গা সংগঠন-এর সভাপতি তুন কিন। একসয়ম তিনি মিয়ানমারে বসবাস করলেও তাকেও দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে বলে জানান তিনি।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, '১৯৮২ সালের পর থেকে মিয়ানমারে আমরা পরগাছার মতো বসবাস করেছি। রোহিঙ্গাদের অধিকার বলতে কিছু নাই। আইনগতভাবে সেখানে আমরা বিয়ে করতে পারি না। চাকরি করতে পারি না। পড়াশুনা করতে পারি না। আমরা সেখানের নাগরিক না। আইন করে আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন তারা বন্ধ করে দিয়েছে। তারা আমাদের হত্যা করেছে। আমি জানি না কোন মানবিকতায় এই কাজ করছে। সবসময় মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চলে। জনসম্মুখে কথাও বলতে পারে না রোহিঙ্গারা। এতকিছুর পরও আমরা আমাদের জমিতে টিকে ছিলাম। তবে ২৫ আগস্ট ২০১৭ সালে শেষ পেরেক মারল মিয়ানমার সরকার। গণহত্যা চালালো আমাদের উপর।'

সম্মেলনে দুই দিনের ছয়টি সেশনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক সহায়তা, সুরক্ষা, অর্থনৈতিক ঝুঁকি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইন, নিরাপত্তা এবং ভূ-রাজনৈতিক মাত্রা নিয়ে আলোচনা করেন এবং এসব বিষয়ে বিশ্লেষণপত্র ও গবেষণা তুলে ধরেন।
 
Status
Not open for further replies.

Users who are viewing this thread

Back
Top