------------------------////-------------
আমি বলছি,,,কোনো মানুষ যদি গল্পটা পরে তাইলে তার চোখ থেকে একফোটা হলেও পানি পরবে!!!!সম্পূর্ণ গল্পটাই দিছি!
Start☺
--দোস্ত একটা কথা বলি? মিম মেঘাকে
বললো।
--বলতেছিসই তো, বল কি কথা ?
-- ভার্সিটি এমনকি বাইরেও অনেক ছেলের
ক্রাশ তুই, আজ ওর সাথে তো কাল অন্য
কারো
সাথে টাইম পাস করিস কিছুদিন পরই আবার
ব্রেকআপ। আর আমাদের ডিপার্টমেন্টের
অভ্র ও
তো তোর দিকে ফিরেও তাকায় না
ছেলেটার এত্ত ভাব,,,,,,!
-- তো আমাকে এসব কেন বলতেছিস?
-- কেন বলছি বুঝছিস না? যদি এতই পারিস
তো
ওকে তোর প্রেমে ফেলে দেখা। মায়া
বললো।
--ইয়াক! তোরা ঐ ক্ষ্যাত ছেলেটার সাথে
প্রেম করতে বলতেছিস! তোরা ভাবলি কি
করে
ওর মতো ভ্যাবলা আনস্মার্ট ছেলের সাথে
আমি প্রেম করবো!
-- আরে আরে আমরা তো সিরিয়াসলি
তোকে
প্রেম করতে বলছি না। যাস্ট ওকে পটিয়েই
দেখা।
-- এতে আমার লাভ টা কি শুনি?
-- এতে তোর কি লাভ,তোর কি লাভ?
ওক্কে যা যদি তুই অভ্রকে পটাতে পারিস
তো
সিলেট ঘুড়তে যাবো আর তোদের সব খরচ
আমার।
মিম বললো।
- সত্যিইইইইই! চিৎকার করে মেঘা বললো।
-- হ্যাঁ সত্যি।
-- ওক্কে।তাহলে ডান।
-- ওকে ডান।
এরপর সবাই যে যার মতো চলে গেল।
পরিচয়টা দেই।
মেঘা, দেখতে খুব সুন্দরী, ছেলেদের সাথে
টাইম পাস করাই ওর কাজ। বলতে পারেন
প্লে
গার্ল। মিম আর মায়া ওর ফ্রেন্ড। সবাই
বড়লোক
বাবার আদরের দুলালী তাই যা ইচ্ছা করে।
আর
যে ছেলেটাকে নিয়ে কথা হচ্ছিল তার নাম
আসিফ আহমেদ অভ্র।
মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে তাই নিজেকে
সব
সময় সাধারণ করেই রাখে। আর বর্তমান এই
সময়ে
সাধারণ এর আপডেট একটা নাম আছে তা
হলো
ক্ষ্যাত।
সাধারণ হয়ে থাকে তাই ভার্সিটিতে
অভ্রর
কোন বন্ধু নেই। যদিও অভ্রর এতে মন খারাপ
হলেও
কিছু করার নেই।
সবার মতো অভ্রর ও রঙিন রঙিন অনেক
স্বপ্নই আছে
তবে সেটা মনের মাঝেই।
চুপচাপ ভার্সিটিতে আসা ক্লাস করা,
হয়তো
একটু ক্যাম্পাসের সবুজ ঘাসের গালিচায়
বসে
থাকে এইতো অভ্রর জীবন।
পরদিন ক্লাস শেষে ক্যাম্পাসে বসে ভাঙা
বাটন ফোনটাতে গান শুনছিলো অভ্র ঠিক
তখনই,
--এইযে ভাইয়া শুনছেন? মায়া বললো।
অভ্র শুনছে বাট কাকে না কাকে ডাকছে
তাই
চুপটি করেই বসে আছে।
--এই যে মিস্টার অভ্র, আপনাকেই ডাকছি।
নিজের নামটা শুনেই মাথা তুলে তাকায়
অভ্র।
-- জ্বী আমাকে ডাকছেন?
-- হ্যাঁ আপনাকেই।
-- জ্বী বলুন।
মিম অভ্রর হাতে একটা চিরকুট দিয়ে বললো,
--এটা আমার ফ্রেন্ড দিয়েছে আপনাকে।
-- কিন্তু এটা কি? আর আমাকেই বা কেন
দিল?
অভ্র
অবাক হয়ে বললো।
--এটা কি তা নিজেই খুলে দেখেন। আর কেন
দিল তা জানি না। মায়া বললো। বলেই
দুজন
চলে গেল।
এদিকে অভ্র বেচারা তো কিছুই বুঝছে না
সব
যে মাথার উপর দিয়ে গেল।
ধ্যাত, হয়তো ফান করছে এই ভেবেই চিরকুট
টা
ব্যাগের ভিতর রেখে বাসায় চলে আসে
অভ্র।
তারপর নানান কাজের মাঝে ভুলেই যায়
চিরকুট টার কথা।
রাতে পড়ার জন্য ব্যাগ থেকে বই বার করার
সময়
বইয়ের সাথে চিরকুট টাও পরে যায়। তখনই
মনে
পড়ে যায়।
খুলবে না খুলবে না ভেবেও কৌতূহলী হয়ে
চিরকুট টা খোলে অভ্র তাতে লেখা,
এইযে আমার বোকা বোকা বাবু, সব সময় এমন
একা
একা কেন থাকো হুহ্? সবার সাথে থাকতে
পারো না?
আর মুখটা কেন প্যাচাঁর মত করে রাখো?
হাঁসতে পারো না বুঝি?
তবে আমি কি করে যে এই নিরামিষ আর
বোকাটার প্রেমে পড়ে গেছি বুঝতেই
পারিনি.....
তুমি এমন একা একা থাকো এটা আমার
কাছে
খারাপ লাগে আর তোমাকে নিয়ে ভাবতে
ভাবতেই তোমার প্রেমে পড়ে গেছি।
অভ্র,
আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি।
আমি মেয়ে সরাসরি বলতে না পারার
লজ্জায়
চিঠিতে জানালাম।
তবে উত্তরটা যেনো "হ্যাঁ"পাই।
আর শুনো, শুনো তোমার চোখগুলা না একদম
গুলুগুলু।
এখন থেকে চশমা পড়ে আসবা কেমন?
আমি ছাড়া কেউ তোমার ঐ মায়াবি চোখ
দেখবে না বুঝলে?
তোমার উত্তরটা যেন হ্যাঁ পাই।
ভালো থেকো।
ইতি
তোমার পাগলি "মেঘা"
চিঠি টা পড়ে সব কেমন গুলিয়ে যায় অভ্রর।
এসব কি যা তা লেখা! আমাকে
ভালোবাসে !
আমার চোখ নাকি গুলুগুলু ! আবার চশমা
পড়তে
হবে?
ধ্যাত, আমার সাথে হয়তো ফান করেছে,
এসব
ভেবেই পড়তে বসে অভ্র।
তবে আজ কেন যানি পড়াতে মন বসছেই না
ওর।
বইয়ের বদলে শুধু মেয়েটার আজগুবি
কথাগুলাই
মনে পড়ছে।
আচ্ছা আমার চোখ কি সত্যিই গুলুগুলু?
হিহিহি
না কি মেয়েটা ফান করছে?
আমাকে কি মেয়েটা আসলেই
ভালোবাসে ?
ধ্যাত্তেরি কি যা তা ভাবছি!
আমাকে কে ভালোবাসবে? এসব ফান।
মনকে অনেকটা শক্ত করেই শুয়ে পড়ে অভ্র।
তবে
চিঠিটার কথা মন থেকে যাচ্ছেই না।
আচ্ছা মেয়েটা দেখতে কেমন হবে?
আমাকে কি ভালোই বাসে?
এসব ভেবে একাই মুচকি মুচকি হাঁসে অভ্র।
রাতে আর ভালো করে ঘুম হয়না ওর। তবে
এটাকে অভ্র ফান ই ধরে নিয়েছে।
পরদিন ক্যাম্পাসের মাঠে বসে আছে অভ্র।
ঠিক
তখনই মেঘার আগমন।
--এই যে আমার চিঠির উত্তরটা কই?
অভ্র শুনেই তো ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়।
এটা
কি বলে?
--কি হলো বলো।
-- কিসের চিঠি ! আর কিসের উত্তর?
--কিসের চিঠি মানে !
এই মিম ওকে আমার চিঠি দিসনি? মেঘা
রেগে বললো।
-- আরে ভাইয়া কালকে না আপনাকে একটা
চিরকুট দিলাম, ওটার কথা বলতেছি আর ওটা
মেঘাই দিছে।
অভ্র মেঘার দিকে একপলক তাকিয়েই
চোখটা
সরিয়ে নেয়। একপলকেই বুঝে নেয় মেয়েটা
অনেক মায়াবি।
-- কি হলো বলো? আমাকে ভালোবাসো
তো?
-- ইয়ে মানে আমি তো চিঠিটা নিয়ে
ভাবি
নি আর কি ভাবে উত্তর দিব?
-- আমি এতো কিছু জানি না আমি
তোমাকে
ভালোবাসি আমার তোমাকে চাই।
--আমি ভেবে পরে বলি?
--আচ্ছা ঠিক আছে। তবে ভেবে বলো আর না
আমাকেই ভালোবাসতে হবে বলে দিলাম
হু।
বলেই মেঘা চলে যায়।
এদিকে অভ্রর মেঘাকে দেখেই খুব ভালো
লেগে যায়।
লাগবে নাই বা কেন? মেঘাকে যে দেখবে
তারই ভালো লাগবে।
অভ্রর কাছে আরও বেশি ভালো লেগে যায়
মেঘার পাগলামি ভরা কথাগুলো। যেন
পিচ্চি
মেয়ের বায়না।
মনের অজান্তেই হেসে দেয় ও।
আসলে অভ্র মনের মাঝে এমনই একটা
মেয়েকে
কল্পনা করে রেখেছিল। যে হবে মায়া পরী,
খুব
চঞ্চল আর পাগলি পাগলি হবে।
বোকা এই অভ্রকে অনেক অনেক
ভালোবাসবে।
অভ্র রাতে শুয়ে শুয়ে মেঘাকে নিয়ে
ভাবতে
থাকে।
যেখানে ভার্সিটির কেউই আমার সাথে
ভালো করে কথাই বলে না সেখানে মেঘা
সুন্দরী একটা মেয়ে আর ঐ তো আমাকে
ভালোবাসার কথা বলেছে।
এখানে আমার কি করা যায়?
প্রেম করলে ভালো না খারাপ হবে?
এসবও ভাবছে অভ্র। তবে কিছুতেই অভ্র কুল
পাচ্ছে
না।
মেয়েটা আমাকে এতো ভালোবাসে আর
ওকে না বলে হার্ট করাটা ঠিক হবে না।
আমারও তো মেঘার মতই একটা পরীর খুব শখ
ছিল।
আর এতোদিনে পেয়েও কি হারিয়ে
ফেলবো!
না না এ হয় না। আমি কালকেই মেঘাকে
ভালোবাসার কথাটি বলেই দেব।
নানান রকম জল্পনা কল্পনা করতে করতেই
ঘুমিয়ে
যায় অভ্র।
পরদিন ক্লাস করে বের হয়েছে অভ্র ঠিক
তখনই
মেঘা বললো,
--এইযে আমার উত্তরটা দাও।
-- হ্যাঁ দিব তার আগে আমার কিছু কথা ছিল
ওদিকটাতে এসো তারপর বলি।
-- হ্যাঁ হ্যাঁ চলো চলো।
আমাকে ভালোবাসো তো?
--দেখো মেঘা আমি জানি না তুমি আমার
কি
দেখে আমাকে ভালোবাসলে।
যেখানে সবাই আমাকে দেখে দূরে দূরে
থাকে সেখানে তুমি একটা মায়াবি পরীর
মত
মেয়ে হয়ে সাধারণ এই আমাকে
ভালোবাসতে চাও।
তবে আমারও না একটা স্বপ্ন ছিল যে,
কাউকে ভালোবাসবো খুব করে
ভালোবাসবো।
আর তুমি ঠিক আমার স্বপ্নের পরীর মতই।
-- তারমানে তুমি আমাকে ভালোবেসে
ফেলছো! মেঘা খুশি হয়ে বললো।
অভ্র লজ্জায় কিছু বলতে পারে না।
--আরে কি হলো? বলো বলো ভালোবাসো
তো আমাকে?
--অভ্র মাথাটা হ্যাঁ সুচক নাড়ায়।
মেঘা বুঝতে পেরেই অভ্রকে আলতো করে
জড়িয়ে ধরে তারপর বলে,
--আমি জানতাম এই বোকা বোকা পাগলটা
আমাকে ঠিকই ভালোবাসবে।
--আমিও ভাবিনি আমি তোমার মতো
কাউকে
পাবো।
এরপর দু'জনে আড্ডা দিয়ে চলে যায়।
পরদিন থেকে শুরু হয় অভ্র আর মেঘার
ভালোবাসার রঙিন অধ্যায়।
একসাথে আড্ডা দেয়া,দুষ্টুমিষ্টি ঝগড়া
করা,
বিকেলে ঘুড়তে যাওয়া এসবের মাঝে খুব খুব
ভালোই কেটে যায় এক একটা দিন।
ঠিক যেন শত রঙে রাঙানো।
অভ্র প্রতিটা দিন মেঘাকে এক নতুন নতুন
ভাবে
উপহার দেয়।
মেঘা ভেবেই পায় না যে, এই বোকা বোকা
ছেলেটা এত্ত রোমান্টিক আর হাসিখুশি
হতে
পারে।
তেমনই আজ বিকেলে বসে আছে নদীর
পাড়ে।
অভ্র মেঘার মুখের উপর পরে থাকা অবাধ্য
চুল
গুলোর দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে
দেখে মেঘা বললো,
--ওভাবে কি দেখো হু?
-- আমার পরীটাকে দেখি।
-- যাহ্,, আমি পরী না কি হুহ্?
-- তুমি শুধু আমার পরী। বলেই মেঘার কাঁধে
মাথা রাখে। তারপর বলে,
--জানো তো মেঘা, আমার অনেক স্বপ্ন
একজনকেই ভালোবাসবো, তার হাতটা ধরেই
সারাজীবন পথ পাড়ি দেব। এমন একটা
হাতের
অপেক্ষায় ছিলাম যে হাত আমার হাতটা
শক্ত
করে ধরে বলবে,
ভয় পেওনা আমি তো আছি তোমার সাথে।
জানো তো মেঘা আমি খুব খুব খুব ভাগ্যবান
আমি তোমাকে পেয়েছি বলে।
সারাজীবন এই পাগলিটাকে খুব যত্ন করে
রাখবো বলেই অভ্র মেঘার হাতটা শক্ত করে
জড়িয়ে ধরে।
দুজনেই চুপচাপ *******
-এই পাগল। মেঘা বললো।
-- হু।
-- সন্ধ্যা হয়ে আসছে তো চলো উঠি এখন।
-- আচ্ছা উঠো।
মেঘা উঠে দাড়াতেই অভ্র বললো,
--একটু চোখটা বন্ধ করো তো পাগলি।
-- চোখ কেন বন্ধ করবো?
-- আহ হা আগে করোই না।
-- ওকে বাবা করলাম এখন বলো।
অভ্র পকেট থেকে অনেক আগের কেনা
পায়েল
টা মেঘার পায়ে পড়িয়ে দেয়।
--এবার চোখ খুলো।
মেঘা চোখটা খুলে পায়ের দিকে তাকিয়ে
দেখে খুব সুন্দর একটা পায়েল।
--এই পাগল এত্ত সুন্দর পায়েল কই পাইলা!
--অনেক আগে কিনে রাখছিলাম। তবে
পরীটাকে তো পাইছিলাম না তাই যত্ন
করে
রেখে দিছিলাম
এখন তো পরীটাকে পাইছি তাই পরীর
পায়েলটা পরীকেই দিলাম।
-- খুব ভালোবাসো আমাকে তাইনা?
--হিহিহি। আমার তো একটাই পরী তো
তোমাকে ভালোবাসবো না কাকে
ভালোবাসবো?
-- আচ্ছা এখন চলো।
-- হ্যাঁ চলো।
এরপর অভ্র মেঘাকে বিদায় দিয়ে নিজেও
চলে
যায়।
এভাবেই ভালোবাসায় ঘেরা এক একটা দিন
কেটে যায় কেটে যায়।
প্রায় একটা মাস অভ্রর এমন পাগলামি ভরা
ভালোবাসায় একদম মগ্ন হয়ে যায় মেঘা।
রাতে শুয়ে আছে মেঘা তখন মিমের ফোন,
--হ্যাঁ মিম বল।
--বাহ্ ভালো তো, অভ্রকে পেয়ে আমাদের
ভুলেই গেছিস যে।
--আরে কি বলিস! তোরা আমার ফ্রেন্ড
তোদের
কি ভোলা যায়?
-- আমাদের ভুলিস, না ভুলিস সেটা বড় কথা
না।
তুই অভ্রকে পটিয়েছিস আর এটাই ছিল
বাজি।আর
তুই বাজিতে জিতেছিস।
পরশু রাতের গাড়ির টিকেট করেছি সিলেট
যাচ্ছি রেডি থাকিস কেমন? (
-- আরে আরে এতো তাড়াতাড়ি কেন
বলছিস!
ছেলেটা আমাকে অনেক ভালোবাসে।
এভাবে কোন কারণ ছাড়া কিভাবে ওর
সাথে
ব্রেকআপ করে দেবো?
--দেখ মেঘা এমন অনেক ছেলেকেই রিজেক্ট
করেছিস এটাও সেভাবেই করবি। পরশু
সিলেট
যাচ্ছি এটাই ফাইনাল।
বলেই ফোনটা কেটে দেয় মিম।
--আরে আরে শো***শোন।
ধ্যাত এখন কি করবো
মাথাটা কাজ করছে না মেঘার।
অভ্র ছেলেটা আমাকে অনেক অনেক
ভালোবাসে
কোন কারণ ছাড়া কি করে কি বলবো?
এসব ভাবছে তখনই আবার অভ্রর ফোন।
--এই পাগলি ডিনার করছো?
-- না করবো, আর তুমি?
--কিইইইই! এতো রাত আর তুমি ডিনার করো
নাই!
যাও খেয়ে আসো তারপর আমি করবো যাও
যাও।
--আচ্ছা ঠিক আছে যাচ্ছি।
-- তুমি খেয়ে এসে ফোন দিয়ে বলবে তবেই
আমি খাব।
--মেঘা ফোনটা কেটে ডিনার করতে যায়।
ডিনার করে এসে বসে বসে মিমের কথা
ভাবে
ভাবতে ভাবতেই চোখটা লেগে আসে আর
শুয়ে
পড়তেই ঘুমিয়ে যায়।
অপরদিকে অভ্র ফোনের দিকে চেয়ে আছে
মেঘা ফোন দিবে তারপর খাবে।
রাত ১২ টা*********** ১ টা, তবুও আর ফোন
আসে না
মেঘার।
অভ্রর খুব খুদা লাগছে, ঘুমে ঢুলে ঢুলে পড়ছে
তবুও
জেগে থাকার চেষ্টা করছে। অপেক্ষা
করছে
মেঘার ফোনের।
ফজরের আযানের শব্দে ঘুমটা ভেঙে যায়
মেঘার। হঠাৎই মনে পড়ে যায় অভ্রকে ফোন
দেয়ার কথা। তাড়াতাড়ি ফোনটা নিয়ে
অভ্রকে ফোন দেয়।
ওদিকে ঘুমে ঢুলছে অভ্র ফোনের শব্দে
জেগে
ওঠে মেঘার ফোন দেখেই মনটা খুশি হয়ে
যায়
অভ্রর। তারাতারি ফোনটা তুলে বলে
--এই পাগলি তুমি ঠিক আছো তো? তোমার
কিছু
হয়নি তো?
--আরে আমি ঠিক আছি। তবে স্যরি অভ্র
তোমাকে ফোন দিতে ভুলে গেছিলাম।
--আরে আরে ঠিক আছে, এতে স্যরি বলার
কি
আছে? তুমি খেয়েছ এটাই অনেক এখন ঘুমাও।
-- এই তুমি খেয়েছ ?
-- ইয়ে মাম মানে তোমার ফোনের
অপেক্ষায়
ছিলাম তবে এখনই খেয়ে নিচ্ছি বাই।
বলেই ফোনটা কেটে দেয় অভ্র।
ওদিকে মেঘা ভাবছে,
যে ছেলেটা আমার ভুলটাকে ঢেকে আগে
কেমন আছি তা জিজ্ঞেস করে, রাতভর
জেগে
আছে শুধু আমার ফোনের অপেক্ষায় একে কি
করে বলবো যে আমি ভালোবাসি না?
পাগলের মত ভালোবাসে।
কি করবে ও?
নাহ্ আর কিছুই ভাবতে পারছি না। মাথাটা
খুব
ব্যাথা করছে, ঘুমিয়ে যায় মেঘা।
ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে আছে মেঘা, মিম আর
মায়া।
--দেখ মেঘা আমরা তোর সাথে বাজি
ধরেছিলাম তুই জিতেছিস এবার অভ্রর
সাথে
ব্রেকআপটা করে ফেল যা।
-- মিম বুঝার চেষ্টা কর, কোন কারণ ছাড়া
কিভাবে বলবো? আগে কিছুদিন ইগনোর
করি
তারপর না হয় ব্রেকআপ করবো।
-- অনেক হয়েছে।তুই জিতেছিস এটাই শেষ
কথা।
আমরা ক্লাস করতে যাচ্ছি ফিরে এসে যেন
শুনি তুই অভ্রর সাথে ব্রেকআপ করেছিস।
-- কিন্তু মায়া শোন।
--কালকে সিলেট যাচ্ছি, বাই।
বলেই চলে গেল।
আর মেঘা মহা চিন্তায় পড়ে বসে বসে
ভাবছে
কি করবে?
অভ্র সত্যিই অনেক ভালোবাসে, অন্য সবার
মত
না। ওর ভালোবাসায় মেঘা নিজেও কেমন
যেন হয়ে গেছে।
ধ্যাত এসব কি ভাবি?
আমি তো ওর সাথে যাস্ট অভিনয় করেছি,
আমিতো ওকে ভালোবাসি না। এমন তো কত
ই
ব্রেকআপ করছি মনে মনে ভাবছে মেঘা।
--এই পাগলি কি ভাবছো এতো? কোথা
থেকে
যেন অভ্র এসে বললো।
মেঘা এতোটাই চিন্তায় মগ্ন যে অভ্রর কথা
শুনতেই পায়নি।
--এই পাগলি তোমার কি মন খারাপ?
--ওহহ তুমি, না না মন খারাপ না তো এমনি।
--উহু আমি ঠিক দেখতে পাচ্ছি আমার
পাগলিটা কোন বিষয়ে খুব চিন্তিত।
-- আরে নাহ।
-- এই পাগলি ****এইযে আমার দিকে তাকাও,
আমি আছি তো, আমাকে বলো,বলো কি
হয়েছে
-- বলবো?
-- আরে হ্যাঁ রে পাগলি বলো।
-- আগে কথা দাও আমি যা বলবো শুনে একটুও
কষ্ট
পাবে না।
-- তোমার কথায় আমি কেন কষ্ট পাবো
বলো?
--নাহ আগে কথা দাও কষ্ট পাবে না তো?
-- পাগলি একটা। এইযে তোমাকে ছুঁয়ে কথা
দিলাম একটুও কষ্ট পাবো না এখন তো বলো।
-- অভ্র।
-- হ্যাঁ বলো।
--আমি না তোমাকে ভালোবাসি না।
-- হিহিহি পাগলিটা দেখছি খুব দুষ্টু তবে এই
কথাটা নিয়ে ফান করো না। আমার খুব কষ্ট
লাগে আর আমি জানি তুমি আমাকে আমার
চাইতেও বেশি ভালোবাসো।
--না অভ্র আমি ঠিকই বলছি আমি তোমাকে
ভালোবাসি না।
--এটা কেন বলছো! আমার খারাপ লাগে যে।
-- সত্যি অভ্র আমি তোমাকে
ভালোবাসিনি।
আমি আমার ফ্রেন্ডদের সাথে বাজিতে
তোমাকে ভালোবেসেছি।
অভ্র আমি তোমার সাথে এতোদিন অভিনয়
করেছি।
কথাটা শুনেই অভ্রর বুকের ভিতর কেমন
কেমন যেন
করে ওঠে। চোখ দিয়ে একাই টুপটুপ করে
পানি
পড়ছে কি বলবে কিছুই বুঝছে না।
--স্যরি অভ্র, আমাকে তুমি মাফ করে দিও
-- হিহিহি। এটা কি বলো? ঠিক আছে তো,
আরে তুমি আমাকে নাই ভালোবাসতে
পারো
তাই বলে কি কান্না করতে হবে? অভ্র
কান্নাটা চেপে রেখে বললো।
-- আমাকে মাফ করো অভ্র তোমার অনেক
কষ্ট
হচ্ছে আমি জানি।
-- এই পাগলি চুপ ****একদম চুপ।
হিহিহি, এই যে দেখো আমি হাসতেছি।
আমি
কেন কষ্ট পাবো?আমি ঠিক আছি।
কিছুক্ষণ নিরবতা।
--মেঘা একটা কথা বলি? অভ্র চোখটা মুছতে
মুছতে বললো।
-- হ্যাঁ বলো
--জানো তো খুব ইচ্ছা ছিল একজনকেই
ভালোবাসবো আর তাকেই আমার করে নেব
তার হাতটাই ধরে রাখবো তবে তা তো আর
হলো না। তবে প্লিইইইজ আমার মতো আর
কারো
সাথে এমনটা করো না কেমন?
অবহেলাটা না একদমই সহ্য করা যায় না।
আর হ্যাঁ দোয়া রইল অনেক সুখি হও। অনেক।
ভালো থেকো।
বলেই চোখটা মুছতে মুছতে চলে যায় অভ্র।
আর সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে মেঘা।
নিজের কাছে কেমন যেন লাগছে মেঘার।
যেন কিছু একটা হারিয়ে যাচ্ছে।
--যাক বাবা ছেলেটা আসলেই বোকা, খুব
সহজেই তো ব্রেকআপ করে দিলি। মায়া
আসতে
আসতে বললো।
-- হ্যাঁ করেছি এবার খুশি তো তোরা?
রেডি থাকিস কালকে সিলেট যাবো।
চিৎকার করে বলে কান্না করতে করতে চলে
আসে মেঘা।
রাতে আর কিছুতেই ঘুম আসে না ওর।
সারাটা রাত শুধু অভ্রর কথাই মনে পড়ছে,
মনে
পড়ছে সব কথা।
অভ্র মন উজার করে ভালোবাসতো তবে
আমি
কি করলাম?
ওপরদিকে অন্ধকার ঘরে বসে বসে নিরবে
চোখের জল ফেলছে অভ্র আর ভাবছে,
আমি তো কোন অপরাধ করি নি,আমি তো
শুধু
ভালোই বেসেছি। তবে কেন এমন হলো কেন
কেন?
পরদিন রাতের গাড়িতে করে সিলেট যায়
মেঘা, মিম আর মায়া।
সারাটা পথ মেঘা একটা কথাও বলেনি।
সিলেট পৌছেঁ হোটেলে এসেই মিম আর
মায়া
ঘুড়তে বেড়িয়ে পরে।
আর রুমেই চুপচুপ বসে আছে মেঘা।
অপরদিকে অভ্র,সে কষ্ট টাকে রাতের
আধারে
পুঁতে রেখে ভার্সিটিতে গেছে।
সারাদিন ঘুড়ে সন্ধ্যায় হোটেলে ফিরে
আসে
মিম আর মায়া দেখে মেঘা বসেই আছে।
হঠাৎই মেঘা খাট থেকে নেমেই দৌড় শুরু
করলো।
মিম তো অবাক এটা কি হচ্ছে!
মেঘা এক দৌড়ে হোটেলের বাইরে চলে
আসে।
তারপর সিএনজি করে সোজা বাস স্টপে।
সেখান থেকে সরাসরি পাবনার গাড়ি।
মেঘা বাসের ভিতর বসে আছে, কোন কিছুই
ভালোলাগছে না। শুধু মনটা ছটফট ছটফট
করতেছে
কখন আবার ফিরে যাবো আমার পাগলটার
কাছে এই ভেবে।
আজ রাস্তাও যেন ফুরাচ্ছেই না, চোখ দিয়ে
পানি পড়ছে মেঘার। মনে হচ্ছে দৌড়ে
অভ্রর
কাছে চলে যেতে।
সকাল ৯টা। পাবনাতে পৌঁছায় মেঘা।
ওর মনটা আর মানছেই না।
একটা দিন ধরে কিছুই খায় নি তবু কোন কষ্ট
নেই
ওর।
শুধু একটা ইচ্ছা কখন অভ্রর কাছে যেতে
পারবে।
পাবনাতে নেমেই সরাসরি ভার্সিটিতে
যায়
মেঘা।
আর অভ্র ভার্সিটির মাঠে দাঁড়িয়ে তখন
আকাশ
পানে একভাবে তাকিয়ে চোখের জল
ফেলছে।
হঠাৎই কিসের যেন প্রচন্ড ধাক্কায় মাঠেই
পড়ে
যায় অভ্র। মনে হচ্ছে অভ্রর গায়ের উপর কিছু
পড়ছে।
মেঘা এতো জোড়েই অভ্রকে জড়িয়ে ধরে
যে
ছিটকে মাঠে পড়ে যায় দু'জন।
হঠাৎই অজস্র চুমাতে অভ্রর গাল, ঠোট, কপাল
ভরিয়ে দেয় মেঘা আর কান্না কন্ঠে বলে,
-- এই পাগল, এই যে তোমার পরীটা ফিরে
এসেছে দেখো দেখো।
তুমি না বলেছিলে তোমার এমন একটা হাত
চাই
যে হাতটা ধরে সব পথ পাড়ি দিতে চাও,
এই পাগল এই যে তোমার হাতটা ধরেছি আর
কোন দিন তোমাকে ছেড়ে যাবো না।
কখনোই যাবো না।
অভ্র এই মুহূর্তে কি বলবে ভেবে পায় না।
চোখ দিয়ে দু'জনেরই শুধু আনন্দ অশ্রু ঝরছে।
হঠাৎই সারা ভার্সিটি করতালিতে
মুখোরিত
হয়ে গেল।
আকাশ বাতাস আর ভার্সিটির অগণিত
মানুষ
সাক্ষী থেকে গেল এক সত্যিকারের
ভালোবাসার।
আর মেঘা লজ্জাতে লাল হয়ে অভ্রর বুকেই
মুখ
লুকিয়ে আছে। হয়তো সে খুঁজে পেয়েছে এমন
একটা স্থান যেখানে মাথা রেখে সারাটা
জীবন কাটিয়ে দেয়া যায়।
অটুট থাকুক এমন হাজারো ভালোবাসার
বন্ধন।
(সমাপ্ত)
আমি বলছি,,,কোনো মানুষ যদি গল্পটা পরে তাইলে তার চোখ থেকে একফোটা হলেও পানি পরবে!!!!সম্পূর্ণ গল্পটাই দিছি!
Start☺
--দোস্ত একটা কথা বলি? মিম মেঘাকে
বললো।
--বলতেছিসই তো, বল কি কথা ?
-- ভার্সিটি এমনকি বাইরেও অনেক ছেলের
ক্রাশ তুই, আজ ওর সাথে তো কাল অন্য
কারো
সাথে টাইম পাস করিস কিছুদিন পরই আবার
ব্রেকআপ। আর আমাদের ডিপার্টমেন্টের
অভ্র ও
তো তোর দিকে ফিরেও তাকায় না
ছেলেটার এত্ত ভাব,,,,,,!
-- তো আমাকে এসব কেন বলতেছিস?
-- কেন বলছি বুঝছিস না? যদি এতই পারিস
তো
ওকে তোর প্রেমে ফেলে দেখা। মায়া
বললো।
--ইয়াক! তোরা ঐ ক্ষ্যাত ছেলেটার সাথে
প্রেম করতে বলতেছিস! তোরা ভাবলি কি
করে
ওর মতো ভ্যাবলা আনস্মার্ট ছেলের সাথে
আমি প্রেম করবো!
-- আরে আরে আমরা তো সিরিয়াসলি
তোকে
প্রেম করতে বলছি না। যাস্ট ওকে পটিয়েই
দেখা।
-- এতে আমার লাভ টা কি শুনি?
-- এতে তোর কি লাভ,তোর কি লাভ?
ওক্কে যা যদি তুই অভ্রকে পটাতে পারিস
তো
সিলেট ঘুড়তে যাবো আর তোদের সব খরচ
আমার।
মিম বললো।
- সত্যিইইইইই! চিৎকার করে মেঘা বললো।
-- হ্যাঁ সত্যি।
-- ওক্কে।তাহলে ডান।
-- ওকে ডান।
এরপর সবাই যে যার মতো চলে গেল।
পরিচয়টা দেই।
মেঘা, দেখতে খুব সুন্দরী, ছেলেদের সাথে
টাইম পাস করাই ওর কাজ। বলতে পারেন
প্লে
গার্ল। মিম আর মায়া ওর ফ্রেন্ড। সবাই
বড়লোক
বাবার আদরের দুলালী তাই যা ইচ্ছা করে।
আর
যে ছেলেটাকে নিয়ে কথা হচ্ছিল তার নাম
আসিফ আহমেদ অভ্র।
মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে তাই নিজেকে
সব
সময় সাধারণ করেই রাখে। আর বর্তমান এই
সময়ে
সাধারণ এর আপডেট একটা নাম আছে তা
হলো
ক্ষ্যাত।
সাধারণ হয়ে থাকে তাই ভার্সিটিতে
অভ্রর
কোন বন্ধু নেই। যদিও অভ্রর এতে মন খারাপ
হলেও
কিছু করার নেই।
সবার মতো অভ্রর ও রঙিন রঙিন অনেক
স্বপ্নই আছে
তবে সেটা মনের মাঝেই।
চুপচাপ ভার্সিটিতে আসা ক্লাস করা,
হয়তো
একটু ক্যাম্পাসের সবুজ ঘাসের গালিচায়
বসে
থাকে এইতো অভ্রর জীবন।
পরদিন ক্লাস শেষে ক্যাম্পাসে বসে ভাঙা
বাটন ফোনটাতে গান শুনছিলো অভ্র ঠিক
তখনই,
--এইযে ভাইয়া শুনছেন? মায়া বললো।
অভ্র শুনছে বাট কাকে না কাকে ডাকছে
তাই
চুপটি করেই বসে আছে।
--এই যে মিস্টার অভ্র, আপনাকেই ডাকছি।
নিজের নামটা শুনেই মাথা তুলে তাকায়
অভ্র।
-- জ্বী আমাকে ডাকছেন?
-- হ্যাঁ আপনাকেই।
-- জ্বী বলুন।
মিম অভ্রর হাতে একটা চিরকুট দিয়ে বললো,
--এটা আমার ফ্রেন্ড দিয়েছে আপনাকে।
-- কিন্তু এটা কি? আর আমাকেই বা কেন
দিল?
অভ্র
অবাক হয়ে বললো।
--এটা কি তা নিজেই খুলে দেখেন। আর কেন
দিল তা জানি না। মায়া বললো। বলেই
দুজন
চলে গেল।
এদিকে অভ্র বেচারা তো কিছুই বুঝছে না
সব
যে মাথার উপর দিয়ে গেল।
ধ্যাত, হয়তো ফান করছে এই ভেবেই চিরকুট
টা
ব্যাগের ভিতর রেখে বাসায় চলে আসে
অভ্র।
তারপর নানান কাজের মাঝে ভুলেই যায়
চিরকুট টার কথা।
রাতে পড়ার জন্য ব্যাগ থেকে বই বার করার
সময়
বইয়ের সাথে চিরকুট টাও পরে যায়। তখনই
মনে
পড়ে যায়।
খুলবে না খুলবে না ভেবেও কৌতূহলী হয়ে
চিরকুট টা খোলে অভ্র তাতে লেখা,
এইযে আমার বোকা বোকা বাবু, সব সময় এমন
একা
একা কেন থাকো হুহ্? সবার সাথে থাকতে
পারো না?
আর মুখটা কেন প্যাচাঁর মত করে রাখো?
হাঁসতে পারো না বুঝি?
তবে আমি কি করে যে এই নিরামিষ আর
বোকাটার প্রেমে পড়ে গেছি বুঝতেই
পারিনি.....
তুমি এমন একা একা থাকো এটা আমার
কাছে
খারাপ লাগে আর তোমাকে নিয়ে ভাবতে
ভাবতেই তোমার প্রেমে পড়ে গেছি।
অভ্র,
আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি।
আমি মেয়ে সরাসরি বলতে না পারার
লজ্জায়
চিঠিতে জানালাম।
তবে উত্তরটা যেনো "হ্যাঁ"পাই।
আর শুনো, শুনো তোমার চোখগুলা না একদম
গুলুগুলু।
এখন থেকে চশমা পড়ে আসবা কেমন?
আমি ছাড়া কেউ তোমার ঐ মায়াবি চোখ
দেখবে না বুঝলে?
তোমার উত্তরটা যেন হ্যাঁ পাই।
ভালো থেকো।
ইতি
তোমার পাগলি "মেঘা"
চিঠি টা পড়ে সব কেমন গুলিয়ে যায় অভ্রর।
এসব কি যা তা লেখা! আমাকে
ভালোবাসে !
আমার চোখ নাকি গুলুগুলু ! আবার চশমা
পড়তে
হবে?
ধ্যাত, আমার সাথে হয়তো ফান করেছে,
এসব
ভেবেই পড়তে বসে অভ্র।
তবে আজ কেন যানি পড়াতে মন বসছেই না
ওর।
বইয়ের বদলে শুধু মেয়েটার আজগুবি
কথাগুলাই
মনে পড়ছে।
আচ্ছা আমার চোখ কি সত্যিই গুলুগুলু?
হিহিহি
না কি মেয়েটা ফান করছে?
আমাকে কি মেয়েটা আসলেই
ভালোবাসে ?
ধ্যাত্তেরি কি যা তা ভাবছি!
আমাকে কে ভালোবাসবে? এসব ফান।
মনকে অনেকটা শক্ত করেই শুয়ে পড়ে অভ্র।
তবে
চিঠিটার কথা মন থেকে যাচ্ছেই না।
আচ্ছা মেয়েটা দেখতে কেমন হবে?
আমাকে কি ভালোই বাসে?
এসব ভেবে একাই মুচকি মুচকি হাঁসে অভ্র।
রাতে আর ভালো করে ঘুম হয়না ওর। তবে
এটাকে অভ্র ফান ই ধরে নিয়েছে।
পরদিন ক্যাম্পাসের মাঠে বসে আছে অভ্র।
ঠিক
তখনই মেঘার আগমন।
--এই যে আমার চিঠির উত্তরটা কই?
অভ্র শুনেই তো ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়।
এটা
কি বলে?
--কি হলো বলো।
-- কিসের চিঠি ! আর কিসের উত্তর?
--কিসের চিঠি মানে !
এই মিম ওকে আমার চিঠি দিসনি? মেঘা
রেগে বললো।
-- আরে ভাইয়া কালকে না আপনাকে একটা
চিরকুট দিলাম, ওটার কথা বলতেছি আর ওটা
মেঘাই দিছে।
অভ্র মেঘার দিকে একপলক তাকিয়েই
চোখটা
সরিয়ে নেয়। একপলকেই বুঝে নেয় মেয়েটা
অনেক মায়াবি।
-- কি হলো বলো? আমাকে ভালোবাসো
তো?
-- ইয়ে মানে আমি তো চিঠিটা নিয়ে
ভাবি
নি আর কি ভাবে উত্তর দিব?
-- আমি এতো কিছু জানি না আমি
তোমাকে
ভালোবাসি আমার তোমাকে চাই।
--আমি ভেবে পরে বলি?
--আচ্ছা ঠিক আছে। তবে ভেবে বলো আর না
আমাকেই ভালোবাসতে হবে বলে দিলাম
হু।
বলেই মেঘা চলে যায়।
এদিকে অভ্রর মেঘাকে দেখেই খুব ভালো
লেগে যায়।
লাগবে নাই বা কেন? মেঘাকে যে দেখবে
তারই ভালো লাগবে।
অভ্রর কাছে আরও বেশি ভালো লেগে যায়
মেঘার পাগলামি ভরা কথাগুলো। যেন
পিচ্চি
মেয়ের বায়না।
মনের অজান্তেই হেসে দেয় ও।
আসলে অভ্র মনের মাঝে এমনই একটা
মেয়েকে
কল্পনা করে রেখেছিল। যে হবে মায়া পরী,
খুব
চঞ্চল আর পাগলি পাগলি হবে।
বোকা এই অভ্রকে অনেক অনেক
ভালোবাসবে।
অভ্র রাতে শুয়ে শুয়ে মেঘাকে নিয়ে
ভাবতে
থাকে।
যেখানে ভার্সিটির কেউই আমার সাথে
ভালো করে কথাই বলে না সেখানে মেঘা
সুন্দরী একটা মেয়ে আর ঐ তো আমাকে
ভালোবাসার কথা বলেছে।
এখানে আমার কি করা যায়?
প্রেম করলে ভালো না খারাপ হবে?
এসবও ভাবছে অভ্র। তবে কিছুতেই অভ্র কুল
পাচ্ছে
না।
মেয়েটা আমাকে এতো ভালোবাসে আর
ওকে না বলে হার্ট করাটা ঠিক হবে না।
আমারও তো মেঘার মতই একটা পরীর খুব শখ
ছিল।
আর এতোদিনে পেয়েও কি হারিয়ে
ফেলবো!
না না এ হয় না। আমি কালকেই মেঘাকে
ভালোবাসার কথাটি বলেই দেব।
নানান রকম জল্পনা কল্পনা করতে করতেই
ঘুমিয়ে
যায় অভ্র।
পরদিন ক্লাস করে বের হয়েছে অভ্র ঠিক
তখনই
মেঘা বললো,
--এইযে আমার উত্তরটা দাও।
-- হ্যাঁ দিব তার আগে আমার কিছু কথা ছিল
ওদিকটাতে এসো তারপর বলি।
-- হ্যাঁ হ্যাঁ চলো চলো।
আমাকে ভালোবাসো তো?
--দেখো মেঘা আমি জানি না তুমি আমার
কি
দেখে আমাকে ভালোবাসলে।
যেখানে সবাই আমাকে দেখে দূরে দূরে
থাকে সেখানে তুমি একটা মায়াবি পরীর
মত
মেয়ে হয়ে সাধারণ এই আমাকে
ভালোবাসতে চাও।
তবে আমারও না একটা স্বপ্ন ছিল যে,
কাউকে ভালোবাসবো খুব করে
ভালোবাসবো।
আর তুমি ঠিক আমার স্বপ্নের পরীর মতই।
-- তারমানে তুমি আমাকে ভালোবেসে
ফেলছো! মেঘা খুশি হয়ে বললো।
অভ্র লজ্জায় কিছু বলতে পারে না।
--আরে কি হলো? বলো বলো ভালোবাসো
তো আমাকে?
--অভ্র মাথাটা হ্যাঁ সুচক নাড়ায়।
মেঘা বুঝতে পেরেই অভ্রকে আলতো করে
জড়িয়ে ধরে তারপর বলে,
--আমি জানতাম এই বোকা বোকা পাগলটা
আমাকে ঠিকই ভালোবাসবে।
--আমিও ভাবিনি আমি তোমার মতো
কাউকে
পাবো।
এরপর দু'জনে আড্ডা দিয়ে চলে যায়।
পরদিন থেকে শুরু হয় অভ্র আর মেঘার
ভালোবাসার রঙিন অধ্যায়।
একসাথে আড্ডা দেয়া,দুষ্টুমিষ্টি ঝগড়া
করা,
বিকেলে ঘুড়তে যাওয়া এসবের মাঝে খুব খুব
ভালোই কেটে যায় এক একটা দিন।
ঠিক যেন শত রঙে রাঙানো।
অভ্র প্রতিটা দিন মেঘাকে এক নতুন নতুন
ভাবে
উপহার দেয়।
মেঘা ভেবেই পায় না যে, এই বোকা বোকা
ছেলেটা এত্ত রোমান্টিক আর হাসিখুশি
হতে
পারে।
তেমনই আজ বিকেলে বসে আছে নদীর
পাড়ে।
অভ্র মেঘার মুখের উপর পরে থাকা অবাধ্য
চুল
গুলোর দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে
দেখে মেঘা বললো,
--ওভাবে কি দেখো হু?
-- আমার পরীটাকে দেখি।
-- যাহ্,, আমি পরী না কি হুহ্?
-- তুমি শুধু আমার পরী। বলেই মেঘার কাঁধে
মাথা রাখে। তারপর বলে,
--জানো তো মেঘা, আমার অনেক স্বপ্ন
একজনকেই ভালোবাসবো, তার হাতটা ধরেই
সারাজীবন পথ পাড়ি দেব। এমন একটা
হাতের
অপেক্ষায় ছিলাম যে হাত আমার হাতটা
শক্ত
করে ধরে বলবে,
ভয় পেওনা আমি তো আছি তোমার সাথে।
জানো তো মেঘা আমি খুব খুব খুব ভাগ্যবান
আমি তোমাকে পেয়েছি বলে।
সারাজীবন এই পাগলিটাকে খুব যত্ন করে
রাখবো বলেই অভ্র মেঘার হাতটা শক্ত করে
জড়িয়ে ধরে।
দুজনেই চুপচাপ *******
-এই পাগল। মেঘা বললো।
-- হু।
-- সন্ধ্যা হয়ে আসছে তো চলো উঠি এখন।
-- আচ্ছা উঠো।
মেঘা উঠে দাড়াতেই অভ্র বললো,
--একটু চোখটা বন্ধ করো তো পাগলি।
-- চোখ কেন বন্ধ করবো?
-- আহ হা আগে করোই না।
-- ওকে বাবা করলাম এখন বলো।
অভ্র পকেট থেকে অনেক আগের কেনা
পায়েল
টা মেঘার পায়ে পড়িয়ে দেয়।
--এবার চোখ খুলো।
মেঘা চোখটা খুলে পায়ের দিকে তাকিয়ে
দেখে খুব সুন্দর একটা পায়েল।
--এই পাগল এত্ত সুন্দর পায়েল কই পাইলা!
--অনেক আগে কিনে রাখছিলাম। তবে
পরীটাকে তো পাইছিলাম না তাই যত্ন
করে
রেখে দিছিলাম
এখন তো পরীটাকে পাইছি তাই পরীর
পায়েলটা পরীকেই দিলাম।
-- খুব ভালোবাসো আমাকে তাইনা?
--হিহিহি। আমার তো একটাই পরী তো
তোমাকে ভালোবাসবো না কাকে
ভালোবাসবো?
-- আচ্ছা এখন চলো।
-- হ্যাঁ চলো।
এরপর অভ্র মেঘাকে বিদায় দিয়ে নিজেও
চলে
যায়।
এভাবেই ভালোবাসায় ঘেরা এক একটা দিন
কেটে যায় কেটে যায়।
প্রায় একটা মাস অভ্রর এমন পাগলামি ভরা
ভালোবাসায় একদম মগ্ন হয়ে যায় মেঘা।
রাতে শুয়ে আছে মেঘা তখন মিমের ফোন,
--হ্যাঁ মিম বল।
--বাহ্ ভালো তো, অভ্রকে পেয়ে আমাদের
ভুলেই গেছিস যে।
--আরে কি বলিস! তোরা আমার ফ্রেন্ড
তোদের
কি ভোলা যায়?
-- আমাদের ভুলিস, না ভুলিস সেটা বড় কথা
না।
তুই অভ্রকে পটিয়েছিস আর এটাই ছিল
বাজি।আর
তুই বাজিতে জিতেছিস।
পরশু রাতের গাড়ির টিকেট করেছি সিলেট
যাচ্ছি রেডি থাকিস কেমন? (
-- আরে আরে এতো তাড়াতাড়ি কেন
বলছিস!
ছেলেটা আমাকে অনেক ভালোবাসে।
এভাবে কোন কারণ ছাড়া কিভাবে ওর
সাথে
ব্রেকআপ করে দেবো?
--দেখ মেঘা এমন অনেক ছেলেকেই রিজেক্ট
করেছিস এটাও সেভাবেই করবি। পরশু
সিলেট
যাচ্ছি এটাই ফাইনাল।
বলেই ফোনটা কেটে দেয় মিম।
--আরে আরে শো***শোন।
ধ্যাত এখন কি করবো
মাথাটা কাজ করছে না মেঘার।
অভ্র ছেলেটা আমাকে অনেক অনেক
ভালোবাসে
কোন কারণ ছাড়া কি করে কি বলবো?
এসব ভাবছে তখনই আবার অভ্রর ফোন।
--এই পাগলি ডিনার করছো?
-- না করবো, আর তুমি?
--কিইইইই! এতো রাত আর তুমি ডিনার করো
নাই!
যাও খেয়ে আসো তারপর আমি করবো যাও
যাও।
--আচ্ছা ঠিক আছে যাচ্ছি।
-- তুমি খেয়ে এসে ফোন দিয়ে বলবে তবেই
আমি খাব।
--মেঘা ফোনটা কেটে ডিনার করতে যায়।
ডিনার করে এসে বসে বসে মিমের কথা
ভাবে
ভাবতে ভাবতেই চোখটা লেগে আসে আর
শুয়ে
পড়তেই ঘুমিয়ে যায়।
অপরদিকে অভ্র ফোনের দিকে চেয়ে আছে
মেঘা ফোন দিবে তারপর খাবে।
রাত ১২ টা*********** ১ টা, তবুও আর ফোন
আসে না
মেঘার।
অভ্রর খুব খুদা লাগছে, ঘুমে ঢুলে ঢুলে পড়ছে
তবুও
জেগে থাকার চেষ্টা করছে। অপেক্ষা
করছে
মেঘার ফোনের।
ফজরের আযানের শব্দে ঘুমটা ভেঙে যায়
মেঘার। হঠাৎই মনে পড়ে যায় অভ্রকে ফোন
দেয়ার কথা। তাড়াতাড়ি ফোনটা নিয়ে
অভ্রকে ফোন দেয়।
ওদিকে ঘুমে ঢুলছে অভ্র ফোনের শব্দে
জেগে
ওঠে মেঘার ফোন দেখেই মনটা খুশি হয়ে
যায়
অভ্রর। তারাতারি ফোনটা তুলে বলে
--এই পাগলি তুমি ঠিক আছো তো? তোমার
কিছু
হয়নি তো?
--আরে আমি ঠিক আছি। তবে স্যরি অভ্র
তোমাকে ফোন দিতে ভুলে গেছিলাম।
--আরে আরে ঠিক আছে, এতে স্যরি বলার
কি
আছে? তুমি খেয়েছ এটাই অনেক এখন ঘুমাও।
-- এই তুমি খেয়েছ ?
-- ইয়ে মাম মানে তোমার ফোনের
অপেক্ষায়
ছিলাম তবে এখনই খেয়ে নিচ্ছি বাই।
বলেই ফোনটা কেটে দেয় অভ্র।
ওদিকে মেঘা ভাবছে,
যে ছেলেটা আমার ভুলটাকে ঢেকে আগে
কেমন আছি তা জিজ্ঞেস করে, রাতভর
জেগে
আছে শুধু আমার ফোনের অপেক্ষায় একে কি
করে বলবো যে আমি ভালোবাসি না?
পাগলের মত ভালোবাসে।
কি করবে ও?
নাহ্ আর কিছুই ভাবতে পারছি না। মাথাটা
খুব
ব্যাথা করছে, ঘুমিয়ে যায় মেঘা।
ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে আছে মেঘা, মিম আর
মায়া।
--দেখ মেঘা আমরা তোর সাথে বাজি
ধরেছিলাম তুই জিতেছিস এবার অভ্রর
সাথে
ব্রেকআপটা করে ফেল যা।
-- মিম বুঝার চেষ্টা কর, কোন কারণ ছাড়া
কিভাবে বলবো? আগে কিছুদিন ইগনোর
করি
তারপর না হয় ব্রেকআপ করবো।
-- অনেক হয়েছে।তুই জিতেছিস এটাই শেষ
কথা।
আমরা ক্লাস করতে যাচ্ছি ফিরে এসে যেন
শুনি তুই অভ্রর সাথে ব্রেকআপ করেছিস।
-- কিন্তু মায়া শোন।
--কালকে সিলেট যাচ্ছি, বাই।
বলেই চলে গেল।
আর মেঘা মহা চিন্তায় পড়ে বসে বসে
ভাবছে
কি করবে?
অভ্র সত্যিই অনেক ভালোবাসে, অন্য সবার
মত
না। ওর ভালোবাসায় মেঘা নিজেও কেমন
যেন হয়ে গেছে।
ধ্যাত এসব কি ভাবি?
আমি তো ওর সাথে যাস্ট অভিনয় করেছি,
আমিতো ওকে ভালোবাসি না। এমন তো কত
ই
ব্রেকআপ করছি মনে মনে ভাবছে মেঘা।
--এই পাগলি কি ভাবছো এতো? কোথা
থেকে
যেন অভ্র এসে বললো।
মেঘা এতোটাই চিন্তায় মগ্ন যে অভ্রর কথা
শুনতেই পায়নি।
--এই পাগলি তোমার কি মন খারাপ?
--ওহহ তুমি, না না মন খারাপ না তো এমনি।
--উহু আমি ঠিক দেখতে পাচ্ছি আমার
পাগলিটা কোন বিষয়ে খুব চিন্তিত।
-- আরে নাহ।
-- এই পাগলি ****এইযে আমার দিকে তাকাও,
আমি আছি তো, আমাকে বলো,বলো কি
হয়েছে
-- বলবো?
-- আরে হ্যাঁ রে পাগলি বলো।
-- আগে কথা দাও আমি যা বলবো শুনে একটুও
কষ্ট
পাবে না।
-- তোমার কথায় আমি কেন কষ্ট পাবো
বলো?
--নাহ আগে কথা দাও কষ্ট পাবে না তো?
-- পাগলি একটা। এইযে তোমাকে ছুঁয়ে কথা
দিলাম একটুও কষ্ট পাবো না এখন তো বলো।
-- অভ্র।
-- হ্যাঁ বলো।
--আমি না তোমাকে ভালোবাসি না।
-- হিহিহি পাগলিটা দেখছি খুব দুষ্টু তবে এই
কথাটা নিয়ে ফান করো না। আমার খুব কষ্ট
লাগে আর আমি জানি তুমি আমাকে আমার
চাইতেও বেশি ভালোবাসো।
--না অভ্র আমি ঠিকই বলছি আমি তোমাকে
ভালোবাসি না।
--এটা কেন বলছো! আমার খারাপ লাগে যে।
-- সত্যি অভ্র আমি তোমাকে
ভালোবাসিনি।
আমি আমার ফ্রেন্ডদের সাথে বাজিতে
তোমাকে ভালোবেসেছি।
অভ্র আমি তোমার সাথে এতোদিন অভিনয়
করেছি।
কথাটা শুনেই অভ্রর বুকের ভিতর কেমন
কেমন যেন
করে ওঠে। চোখ দিয়ে একাই টুপটুপ করে
পানি
পড়ছে কি বলবে কিছুই বুঝছে না।
--স্যরি অভ্র, আমাকে তুমি মাফ করে দিও
-- হিহিহি। এটা কি বলো? ঠিক আছে তো,
আরে তুমি আমাকে নাই ভালোবাসতে
পারো
তাই বলে কি কান্না করতে হবে? অভ্র
কান্নাটা চেপে রেখে বললো।
-- আমাকে মাফ করো অভ্র তোমার অনেক
কষ্ট
হচ্ছে আমি জানি।
-- এই পাগলি চুপ ****একদম চুপ।
হিহিহি, এই যে দেখো আমি হাসতেছি।
আমি
কেন কষ্ট পাবো?আমি ঠিক আছি।
কিছুক্ষণ নিরবতা।
--মেঘা একটা কথা বলি? অভ্র চোখটা মুছতে
মুছতে বললো।
-- হ্যাঁ বলো
--জানো তো খুব ইচ্ছা ছিল একজনকেই
ভালোবাসবো আর তাকেই আমার করে নেব
তার হাতটাই ধরে রাখবো তবে তা তো আর
হলো না। তবে প্লিইইইজ আমার মতো আর
কারো
সাথে এমনটা করো না কেমন?
অবহেলাটা না একদমই সহ্য করা যায় না।
আর হ্যাঁ দোয়া রইল অনেক সুখি হও। অনেক।
ভালো থেকো।
বলেই চোখটা মুছতে মুছতে চলে যায় অভ্র।
আর সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে মেঘা।
নিজের কাছে কেমন যেন লাগছে মেঘার।
যেন কিছু একটা হারিয়ে যাচ্ছে।
--যাক বাবা ছেলেটা আসলেই বোকা, খুব
সহজেই তো ব্রেকআপ করে দিলি। মায়া
আসতে
আসতে বললো।
-- হ্যাঁ করেছি এবার খুশি তো তোরা?
রেডি থাকিস কালকে সিলেট যাবো।
চিৎকার করে বলে কান্না করতে করতে চলে
আসে মেঘা।
রাতে আর কিছুতেই ঘুম আসে না ওর।
সারাটা রাত শুধু অভ্রর কথাই মনে পড়ছে,
মনে
পড়ছে সব কথা।
অভ্র মন উজার করে ভালোবাসতো তবে
আমি
কি করলাম?
ওপরদিকে অন্ধকার ঘরে বসে বসে নিরবে
চোখের জল ফেলছে অভ্র আর ভাবছে,
আমি তো কোন অপরাধ করি নি,আমি তো
শুধু
ভালোই বেসেছি। তবে কেন এমন হলো কেন
কেন?
পরদিন রাতের গাড়িতে করে সিলেট যায়
মেঘা, মিম আর মায়া।
সারাটা পথ মেঘা একটা কথাও বলেনি।
সিলেট পৌছেঁ হোটেলে এসেই মিম আর
মায়া
ঘুড়তে বেড়িয়ে পরে।
আর রুমেই চুপচুপ বসে আছে মেঘা।
অপরদিকে অভ্র,সে কষ্ট টাকে রাতের
আধারে
পুঁতে রেখে ভার্সিটিতে গেছে।
সারাদিন ঘুড়ে সন্ধ্যায় হোটেলে ফিরে
আসে
মিম আর মায়া দেখে মেঘা বসেই আছে।
হঠাৎই মেঘা খাট থেকে নেমেই দৌড় শুরু
করলো।
মিম তো অবাক এটা কি হচ্ছে!
মেঘা এক দৌড়ে হোটেলের বাইরে চলে
আসে।
তারপর সিএনজি করে সোজা বাস স্টপে।
সেখান থেকে সরাসরি পাবনার গাড়ি।
মেঘা বাসের ভিতর বসে আছে, কোন কিছুই
ভালোলাগছে না। শুধু মনটা ছটফট ছটফট
করতেছে
কখন আবার ফিরে যাবো আমার পাগলটার
কাছে এই ভেবে।
আজ রাস্তাও যেন ফুরাচ্ছেই না, চোখ দিয়ে
পানি পড়ছে মেঘার। মনে হচ্ছে দৌড়ে
অভ্রর
কাছে চলে যেতে।
সকাল ৯টা। পাবনাতে পৌঁছায় মেঘা।
ওর মনটা আর মানছেই না।
একটা দিন ধরে কিছুই খায় নি তবু কোন কষ্ট
নেই
ওর।
শুধু একটা ইচ্ছা কখন অভ্রর কাছে যেতে
পারবে।
পাবনাতে নেমেই সরাসরি ভার্সিটিতে
যায়
মেঘা।
আর অভ্র ভার্সিটির মাঠে দাঁড়িয়ে তখন
আকাশ
পানে একভাবে তাকিয়ে চোখের জল
ফেলছে।
হঠাৎই কিসের যেন প্রচন্ড ধাক্কায় মাঠেই
পড়ে
যায় অভ্র। মনে হচ্ছে অভ্রর গায়ের উপর কিছু
পড়ছে।
মেঘা এতো জোড়েই অভ্রকে জড়িয়ে ধরে
যে
ছিটকে মাঠে পড়ে যায় দু'জন।
হঠাৎই অজস্র চুমাতে অভ্রর গাল, ঠোট, কপাল
ভরিয়ে দেয় মেঘা আর কান্না কন্ঠে বলে,
-- এই পাগল, এই যে তোমার পরীটা ফিরে
এসেছে দেখো দেখো।
তুমি না বলেছিলে তোমার এমন একটা হাত
চাই
যে হাতটা ধরে সব পথ পাড়ি দিতে চাও,
এই পাগল এই যে তোমার হাতটা ধরেছি আর
কোন দিন তোমাকে ছেড়ে যাবো না।
কখনোই যাবো না।
অভ্র এই মুহূর্তে কি বলবে ভেবে পায় না।
চোখ দিয়ে দু'জনেরই শুধু আনন্দ অশ্রু ঝরছে।
হঠাৎই সারা ভার্সিটি করতালিতে
মুখোরিত
হয়ে গেল।
আকাশ বাতাস আর ভার্সিটির অগণিত
মানুষ
সাক্ষী থেকে গেল এক সত্যিকারের
ভালোবাসার।
আর মেঘা লজ্জাতে লাল হয়ে অভ্রর বুকেই
মুখ
লুকিয়ে আছে। হয়তো সে খুঁজে পেয়েছে এমন
একটা স্থান যেখানে মাথা রেখে সারাটা
জীবন কাটিয়ে দেয়া যায়।
অটুট থাকুক এমন হাজারো ভালোবাসার
বন্ধন।
(সমাপ্ত)