কবিতা

আমি কখনোই বিচ্ছিন্নবাদীদের ভালোবাসতে পারিনি দীপের চেয়ে পাহাড়ই আমাকে কাছেটেনেছে বেশী পাহাড়ের অরন্য, বৃষ্টি আর মেঘের সাথে যার সখ্যতা- যেখানে সবাইকে কাছে রেখেও হারিয়ে যাওয়ায়, সবার ভেতর থেকেও নিজেকে নির্জনতায় ডুবানো যায়- একি দিতে পারে বিচ্ছিন্ন দীপ কেউ একজন আমাকে হারিয়ে যাবার আহ্বান করে, আমি কিচ্ছু...

পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি আর'তো তুমি নেই পায়ের ওখানে পায়ের চিহ্ন / পায়ের ছাপ হ্নদয়'তো কাঁপবেই! একটা একলা মানুষ একলা পাহাড় - আকাশ না দেখা ভোর আকাশ খানি কে নিলো তার- হঠাৎ আসা চোর? আমি না হয়, নাই বা পেলাম ওমন হাতের ছোঁয়া। পাথরগুলি গুছিয়ে নিচ্ছি পাহাড় বানাবো- ঠিক দেখে নিস তোরা!

আমার মন খারাপের সঙ্গী - আমার প্রিয় কবিতা হুমায়ূন আজাদ ভালো থেকো ফুল, মিষ্টি বকুল, ভালো থেকো। ভালো থেকো ধান, ভাটিয়ালি গান, ভালো থেকো। ভালো থেকো মেঘ, মিটিমিটি তারা। ভালো থেকো পাখি, সবুজ পাতারা। ভালো থেকো। ভালো থেকো চর, ছোট কুড়ে ঘর, ভালো থেকো। ভালো থেকো চিল, আকাশের নীল, ভালো থেকো। ভালো থেকো...

আমিও এ শহড় ছেরে চলে যতে চেয়েছিলাম, যখন বাতাসে শিশার মাত্রা বাড়ল, যখন এ শহড়ের বাতাস নির্মলতা হারালো, যখন এ শহড় ছেরে পাখিরা পালালো, বাতাসের রং বদলে গেল, যন্ত্রের কালো ধোয়ায় পুরো আকাশটা ছেয়ে গেল, ফুলের ভেতর কীট জন্মাতে থাকলো, লাশ কাটা ঘরে পচা মাংসের গন্ধ বাড়ল, বুড়ি গংগায় কিছু মৃত মাছ পাওয়া গেল...

তুমি একটু ভাল করে তাকাও, তুমি একটু ভাল করে দেখ, দেখবে- আমার ভেতরেই আছে তোমার অন্ধ প্রেমিক, আমার ভেতরেই আছে তোমার আদিম পুরুষ, আমার ভেতরেই আছে তোমার কাঙ্খিত সুখ, আমার ভেতরেই আছে তোমার সে পাগল প্রেম! তুমি একটু ভাল করে তাকাও, তুমি একটু ভাল করে দেখ, দেখবে- আমার ভেতর আছে তোমার আপন ঘর, আমার ভেতর আছে...

শব্দ শব্দের যে এত সুগন্ধ থাকতে পারে, শব্দ যে এত সুন্দর হতে পারে, শব্দের যে এত ঐশ্বর্য থাকতে পারে, শব্দকেও যে এত ভালবাসা যেতে পারে সে আমি টের পেলাম, যখন তোমার কাছ থেকে, তোমার মুখ থেকে, ঠোট থেকে, হাসি থেকে শব্দ ঝরে ঝরে পড়তে দেখলাম। আমার নিস্তব্ধ পৃথিবী যখন তোমার শব্দের খজ পেল, সে মৃত থেকে জীবীত...

আমার এক চোখে দৃষ্টি না থেকে যদি সে থাকতো। হয়তো এক চোখেই দেখতে হত এ পৃথিবী তবু আমি মানুষ চিনতে পারতাম। সব মানুষ সব মানুষে কষ্ট, বর যাত্রী থেকে শব যাত্রী; বড় লোক ছোট লোক; কোনটা লোক দেখানো আর কোনটা মহৎ চোখ -সব বুঝতাম। তবু যদি সে থাকতো। আমার যদি একটি কিডনি না থেকে সে থাকতো। হয়তো শারীরিক ভাবে একটু...

নক্ষত্রহীন রাত মধ্য রাতে আমার এ বৃষ্টি ভেজা শহর, উচু দেয়াল, পিচের রাস্তা ভিজে ভিজে জানালার এপারে অন্ধকারে তাকিয়ে আছে - বসে আছে একলা এক গন্তব্যহীন। অমন বিদ্যুত চমকালে, রাতের কালো কিছুটা হয়তো কমে, মনের কষ্ট মেঘের কষ্ট যায় কি আর, সারাটা বছর এমন বৃষ্টি অবগাহনে। জানি রাত পোহাবে, আবার ব্যস্ত হবে...

আমাকে যদি কেও জিজ্ঞাস করে, আপনি কে? আমি বলব, আমি মানুষ; কেননা, আমার জন্মের সময় আমি মানুষ হিসেবেই পৃথিবীতে এসেছিলাম, মানবিকতা আমাকে সবচেয়ে বেশী টানে, মানুষ হতেই ইচ্ছে হয়েছে আমার সব সময়। আমাকে যদি কেও জিজ্ঞাস করে আপনি কে? আমি বলব, আমি হিন্দু; কেননা, আমার পূর্বুরুষরা ছিলেন হিন্দু, তারাও সাদা ধুতি...

সবাই জানে, পরীস্থানের সম্রাট থেকে পাড়ার ছোট লোক। কতটা আমি ভালবেসেছি, আর কতটা পেয়েছি শোক! জানে, স্টেশন মাস্টার, চায়ের দোকানী জানে, তোমাদের সে মোন্নাফের মোড়। জানে, শীতের রাত কুয়াশা ঢাকা ভোর কতটা আমি ভালবেসেছি, আর কতটা পেয়েছি শোক! জানে, মন্দীরের দশ হাতওয়ালী দেবী জানে, কপাল পোড়া কবি। জানে, পদ্মা...

দুঃখ পাখি দুঃখ পাখি কোথায় থাকিস তুই? হাত দিয়ে'তো ছুই না তোকে দুঃখ দিয়ে ছুঁই! তুই হইলি আগুন পাখি, বুকের কষ্টে পোড়া। তোর পাখিটি হারিয়ে গেছে; তোর মেলেনি জোড়া। স্মৃতির চাবুক চলতে থাকে তোর মনেতে রোজ; কে খোজ রাখে ভালোবাসার- সবাই ডাকাত চোর।

জানিস পাহাড় কখন পাহাড় হয়? হ্যা- পাহাড় তখনই পাহাড় হয় কষ্ট মেঘ বইতে বইতে তার হ্নদয় যখন আকাশ ছঁয়- পাহাড় তখন পাহাড় হয়।

পাথরও একদিন পাহাড় ছিলো দূরত্বটা বাড়তে বাড়তে আজকে ও একলা হল....................................................... পাথর হল..........................................................

অনুকাব্য মহাজনকে মিশাতে দেইনি - তেলের সাথে জল। তবুও সে বন্ধ করেনি - গোপন প্রেমের কল।

বেশী কিছু চাইনি আমার অল্প চাওয়াই থাক। চেয়েছি শুধু তোমার হাতের একমুঠো গরম ভাত। চেয়েছি তোমার হাতের একটু নুন পাট শাক। চেয়েছি সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে তোমার অপেক্ষার মুখ। চাইনি, তুমিহীন শূন্য ঘর বাহিরে অপার সুখ। বেশী কিছু চাই নি আমার অল্প চাওয়াই থাক। চেয়েছি দুটি হাতে আরো দুটি হাত। চেয়েছি সোনার বালার...

তোমার সাথে একবার দেখা হবার পর, আবার হালে পাই পানি আবার নৌকো চালাতে শুরু করি আবার এপার থেকে ওপারে যাই তোমার সাথে দেখা হবার পর আবার বারান্দায় দাড়াই ছাদে উঠি, গুনগুনিয়ে গান গাই তোমার সাথে একবার দেখা হবার পর শিশুদের ভালবাসতে শুরু করি খেলার মাঠে যাই, আহত পাখিকে সেবা দিতে শুরু করি তোমার সাথে দেখা...

অনুকাব্য এক বুকের কান্নায় কাঁদে আরেক বুক। যে রমনী বাসলে'না ভালো তাকে - কি করে বুঝাই এ আবার কেমন অসুখ!

খুব দেখতে ইচ্ছা করে খুব দেখতে ইচ্ছে করে তুমি কিভাবে হাতের উপর হাত রেখে বস! খুব দেখতে ইচ্ছে করে তোমার কিভাবে নাকে উপর বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে! খুব দেখতে ইচ্ছে করে, কথা বলার সময় তোমার ঠোট কিভাবে নড়ে! খুব দেখতে ইচ্ছে করে, হাসির সময় তোমার গালে ক্যামনে টোল পরে! খুব দেখতে ইচ্ছে করে! খুব দেখতে ইচ্ছে করে...

এক দিন কবিতার প্রেমে ঘর ছেড়ে ছিলাম। তখন চাঁদ চলে আসে খুব কাছে; আমার দেহেও প্রচন্ড জোয়ার। নিষেধ থাকা সত্বেও খেয়ে নিয়ে ছিলাম ভালবাসার নিষিদ্ধ ফল। পাতা ঝড়া বৃক্ষের কষ্ট আমাকে ছুঁয়ে গিয়েছিলো। বাবুই পাখির সংসার, চন্দ্রমুখী ফুলের বাতাসের দোল দোলা দিয়েছিলো মনে। কবিতা তখন হঠাৎ হঠাৎ আমার কাছে আসে- আমাকে...

আমার উনি আমার জীবন' আমার উনি জীবন আমার ওনার জন্য সবকিছু ওনার সুখই আমার সুখ। এইতো সেদিন উনি হঠাৎ চেয়ে বসলেন হীরের আংটি। না দিলে না খেয়ে থাকবেন- এটা কোনো কথা? আমার উনি সবকিছু যা ছিলো সব দিয়ে দিলাম কিনে। উনি খুশি হলেন। বাবার চিকিৎসার জন্য জমিয়েছিলাম টাকাটা। তাতে কি? আমার উনি জীবন আমার ওনার জন্যই...