আমার স্ত্রী ঊর্মিলা, সে একজন স্বাধীন ব্যবসায়ী। লাভ ক্ষতির হিসাব নিয়ে তাঁর জীবন। পেশাগত কারণেই তাঁর পরনে সারাক্ষণ শার্ট প্যান্ট থাকে। মাঝেমধ্যে শার্ট প্যান্ট পরেই ঘুমায় কারণ খুব সকালে মিটিং থাকে।
রাত বাজে বারোটা।
চিত্রশিল্পীরা নাকি ঘুমায় বেশি। কিন্তু আমার ঘুম খুব কম হয়। রাত জাগি বেশি। পরশু অল্প বয়েসী একটা মেয়ে খুব আগ্রহ নিয়ে আমার কাছে এসে বলল একটা ছবি এঁকে দিতে। মেয়েটার এত আগ্রহ দেখে জিজ্ঞেস করলাম, কোনো প্রিয়জনকে দেবে বুঝি?
' হুঁ, আমার স্বামীকে। সে চলে যাবে। '
' কোথায় চলে যাবে? '
' সেটা বলতে পারলাম না। আপনি এঁকে রাখবেন। আমি এক তারিখ এসে নিয়ে যাব। '
কালকে তাঁর ছবিটা দেওয়ার কথা। অগ্রিম টাকা দিয়ে গেছে বকশিশ সহ। কাকতালীয়ভাবে ওই মেয়ের সাথে ঊর্মিলার চেহারার মিল আছে।
আমি জেগে থাকলে ঘরের প্রধান দরজা খোলা থাকে। ঊর্মিলা ঘরে ঢুকল। শব্দহীন চলাফেরা করছে। বুঝতে পারলাম এবার মনে হয় বড়ো অঙ্কের ক্ষতি হয়েছে!
কাপড়চোপড় খুলে গোসল করে নিল। আমি সেই মেয়েটার ছবি আঁকছি। রাতের খাবার আমরা একসাথে খাই। নাহলে বিয়ে করেছি যে মনে হয় না! ঊর্মিলার কথা জানি না।
খুবই হতাশা মাখা মুখ নিয়ে সে এসে টেবিলের সামনে বসল, কী করছ?
' আর কী করব? ছবি আঁকি। '
' কার ছবি আঁক? '
' একটা মেয়ের। '
' আজকাল তোমার ছবি মেয়েরাই পছন্দ করছে বেশি দেখছি! '
' এমনি এমনি কাউকে ছবি এঁকে দেই না। টাকা দেয় তাই দেই। '
' তাও কথা। আচ্ছা আমার ছবি তুমি কখনো আঁক না কেন? আমি কি দেখতে খুবই খারাপ? '
চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন। সে হিসাব নিকাশে কড়া হলেও কঠিন কথা কখনোই বলে না।
আমি উত্তর দিলাম, তোমার ছবি আঁকব। যেদিন তোমার ছবি আঁকব। সেদিন থেকে আর অন্য মেয়ের ছবি আঁকব না! '
' কথাটা মিথ্যা হলেও, শুনে ভালো লেগেছে। এবার খেতে যাওয়া যাক? আমার ঘুম পেয়েছে। '
মেয়েরা সবসময় বাবাপক্ষ হয়। কিন্তু আমাদের মেয়ে হয়েছে মাপক্ষ। তাই আমি ডাকি মাতৃকা। সে ঘুমায় পাশের রুমে।
ঊর্মিলা জিজ্ঞেস করল, তোমার মেয়ে খেয়েছে?
' আমার মেয়ে? '
' তো অন্য কারো মনে হয়? '
' না! কিন্তু আমার তো একার না! '
' সেটা আমি বলিনি। '
' ও খেয়েছে। দশটার আগেই খেয়ে ঘুম। '
খাবার টেবিলে যা ছিল আমরা দুজন খেয়ে শেষ করে ফেললাম।
' তোমার ব্যবসা নিয়ে আমি কিছু জিজ্ঞেস করতে পারি? '
আমি জিজ্ঞেস করলাম।
সে মুখের উপর মানা করে দিল, না! তোমার এই বিষয়ে কোনো ধারণা নাই!
' আচ্ছা! তবে কেন মন খারাপ তা তো জিজ্ঞেস করতে পারি? '
' আমার মন খারাপ সেটা যে আপনি বুঝতে পেরেছেন। আমি ধন্য হয়ে গেলাম। কিন্তু আমার মন খারাপের কারণটা আপনি জানেন। '
আমি জানি না।
আমি সাদাসিধে মানুষ। কথা বলি হিসেব করে। দুয়েকদিনের ভেতরে কোনো ভুল করেছি বলে তো মনে হয় না।
গরমের দিন।
পাখা ছেড়ে দিয়ে আমরা পাতলা কম্বল গায়ে দিয়ে শুই। সকালে একবার সে বিছানা ছেড়ে দিল। ভাবলাম ছটার আগেই বুঝি কোথাও যাবে। না, সে পাঁচ মিনিট পরে এসে এমনভাবে আমাকে জড়িয়ে ধরল! আমার মনে হলো কম্বলটার আর দরকার নেই।
কিন্তু হঠাৎ এত উষ্ণতার ব্যাখ্যা বুঝতে পারলাম না। জিজ্ঞেসও করলাম না। তাহলে ভাববে ভালোবাসায় সন্দেহ করছি! কিছুক্ষণ পর সে বলল, তুমি আমায় এত ভালোবাসো? আমি কখনো বুঝতে পারিনি!
ভালো তো আমি বাসিই। এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু সে কী দেখে হঠাৎ আবিষ্কার করল আমি এত ভালোবাসি! এটাও জিজ্ঞেস করলাম না। জিজ্ঞেস করে আর পরিবেশ নষ্ট করতে চাই না।
এভাবে সকাল দশটা বেজে গেল।
খাবার টেবিলে গিয়ে দেখলাম একটা বড়ো বাক্স। জিজ্ঞেস করার আগেই ঊর্মিলা বলল, তোমার জন্য এনেছি। ভেতরে কী আছে সেটা বলব না। আমি যাওয়ার পরে খুলে দেখবে।
' আচ্ছা! '
এই মেয়ে এমনি এমনি কিছু দেয় না। বিনিময়ে বিশিষ্ট। ব্যবসায়ী বলে কথা। আমি কী দিলাম যে সে এর বিপরীতে এত বড়ো একটা বাক্সে করে উপহার আনলো! আমি এবার জিজ্ঞেস না করে পারলাম না।
আমার উত্তরে সে বলল, আজকে যে আমার জন্মদিন। তুমি সেটা মনে রেখেছ। এবং সুন্দর একটি উপহার দিয়েছ।
অনেকেরই বিশেষ দিন ভুলে যাওয়ার রোগ আছে। আমিও সেই রোগের রুগী। আমার মনে ছিল না কিছুই!
' তোমার জন্মদিন আজকে? '
ঊর্মিলা হেসে বলল, আর ভান করো না। তোমার আঁকা ছবিটা আমি দেখে ফেলেছি। ছবিটা খুব ভালো হয়েছে। সত্যিই, বলতে হবে তোমার হাতটা খুবই পাকা। ছবিটায় স্পষ্ট আমার কলেজে থাকাকালীন মুখটা ভেসে উঠছে!
আমি মাথায় হাত দিয়ে ভাবছি, হায় হায়! সেই মেয়ের ছবিটা ঊর্মিলা নিজের মনে করছে! অনেক দিন পরে ঊর্মিলাকে এত খুশি দেখছি। বলতেও ইচ্ছে করছে না এটা অন্য কারো জন্য এঁকেছি!
ঊর্মিলা আবার বলল, মাথায় হাত দেওয়ার কিছু নাই। আচ্ছা তুমি এমন লজ্জা পাও কেন বলো তো? তুমি তো মেয়ে মানুষ না। তোমার এত লজ্জা মানায় না। আসলে আমি বুঝতে পেরেছি। তুমি যতটা প্রকাশ করো। তারচেয়ে অনেক বেশি আমাকে ভালোবাসো। ঠিক না?
আমার মাথা নাড়ানো ছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই।
খাবার টেবিলে বসে আবার ঊর্মিলা বলল, অনেক দিন কাউকে নিজের হাতে তুলে খাওয়াই না! মাতৃকাও বড়ো হয়ে গেছে। নিজের হাতেই খায়। আচ্ছা হা করো। তোমাকে আজকে তুলে খাওয়াই।
আর যাই হোক, এমন করে বলল তো না বলা যায় না।
কিন্তু আমার ভেতরে ভেতরে অস্থিরতা কাজ করছে। এই বুঝি মেয়েটা নিজের ছবি নিতে হাজির হলো!
দুলঙ্কা (কিশোরগঞ্জের ভাষায়) আমার মুখে তুলে দিতে না দিতেই মেয়েটা হাজির! তাঁর প্রথম কথাই, আংকেল, আমার ছবিটা রেডি?
ঊর্মিলা বলল, কীসের ছবি?
' আপনি কি আন্টি? '
' জি, আমি আন্টি। '
' ওহ, আন্টি উনাকে ছবি আঁকতে বলেছিলাম। আজকে দেবার কথা। '
ঊর্মিলা আমার দিকে একবার তাকাল। যেন মেয়েটা না থাকলে এখনি গলা চেপে ধরে!
' ওহ! আপনার ছবিটা রেডি আছে। এনে দিচ্ছি। আপনি বসুন। '
হাত ধুয়ে ঊর্মিলা ছবিটা এনে মেয়েটাকে দিল। মেয়েটা হাতে ছবিটা নিয়ে বলল, খুব সুন্দর হয়েছে আংকেল। আবার আসব হয়তো অন্য কারো ছবি নিয়ে। ভালো থাকবেন। আমি আসছি।
মেয়েটা চলে যেতেই ঊর্মিলা দরজা লাগিয়ে দিয়ে এসে আমার গলা চেপে ধরে বলল, *** তুই আমার ফিলিংসে পানি ঢেলে দিলি!
আমি কোনোরকম বললাম, এটা তো আমার কোনো দোষ না! মেয়েটার চেহারা তোমার সাথে মিলে!
বলতে না বলতেই মাতৃকা নিজের রুম থেকে বেরিয়ে এসে বলল, মা! সকাল সকাল কী শুরু করেছ! আর তুমি বাবার গলায় ধরে আছ কেন?
মুহূর্তেই ঊর্মিলা মেঘনাদ মুখটাকে চাঁদের আলোয় পরিবর্তন করে ফেলল। সুন্দর এক হাসি দিয়ে বলল, কিছুনা মা! তোমার বাবার ঠান্ডা লেগেছে। তাই গলায় মালিশ করে দিচ্ছি!
রাত বাজে বারোটা।
চিত্রশিল্পীরা নাকি ঘুমায় বেশি। কিন্তু আমার ঘুম খুব কম হয়। রাত জাগি বেশি। পরশু অল্প বয়েসী একটা মেয়ে খুব আগ্রহ নিয়ে আমার কাছে এসে বলল একটা ছবি এঁকে দিতে। মেয়েটার এত আগ্রহ দেখে জিজ্ঞেস করলাম, কোনো প্রিয়জনকে দেবে বুঝি?
' হুঁ, আমার স্বামীকে। সে চলে যাবে। '
' কোথায় চলে যাবে? '
' সেটা বলতে পারলাম না। আপনি এঁকে রাখবেন। আমি এক তারিখ এসে নিয়ে যাব। '
কালকে তাঁর ছবিটা দেওয়ার কথা। অগ্রিম টাকা দিয়ে গেছে বকশিশ সহ। কাকতালীয়ভাবে ওই মেয়ের সাথে ঊর্মিলার চেহারার মিল আছে।
আমি জেগে থাকলে ঘরের প্রধান দরজা খোলা থাকে। ঊর্মিলা ঘরে ঢুকল। শব্দহীন চলাফেরা করছে। বুঝতে পারলাম এবার মনে হয় বড়ো অঙ্কের ক্ষতি হয়েছে!
কাপড়চোপড় খুলে গোসল করে নিল। আমি সেই মেয়েটার ছবি আঁকছি। রাতের খাবার আমরা একসাথে খাই। নাহলে বিয়ে করেছি যে মনে হয় না! ঊর্মিলার কথা জানি না।
খুবই হতাশা মাখা মুখ নিয়ে সে এসে টেবিলের সামনে বসল, কী করছ?
' আর কী করব? ছবি আঁকি। '
' কার ছবি আঁক? '
' একটা মেয়ের। '
' আজকাল তোমার ছবি মেয়েরাই পছন্দ করছে বেশি দেখছি! '
' এমনি এমনি কাউকে ছবি এঁকে দেই না। টাকা দেয় তাই দেই। '
' তাও কথা। আচ্ছা আমার ছবি তুমি কখনো আঁক না কেন? আমি কি দেখতে খুবই খারাপ? '
চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন। সে হিসাব নিকাশে কড়া হলেও কঠিন কথা কখনোই বলে না।
আমি উত্তর দিলাম, তোমার ছবি আঁকব। যেদিন তোমার ছবি আঁকব। সেদিন থেকে আর অন্য মেয়ের ছবি আঁকব না! '
' কথাটা মিথ্যা হলেও, শুনে ভালো লেগেছে। এবার খেতে যাওয়া যাক? আমার ঘুম পেয়েছে। '
মেয়েরা সবসময় বাবাপক্ষ হয়। কিন্তু আমাদের মেয়ে হয়েছে মাপক্ষ। তাই আমি ডাকি মাতৃকা। সে ঘুমায় পাশের রুমে।
ঊর্মিলা জিজ্ঞেস করল, তোমার মেয়ে খেয়েছে?
' আমার মেয়ে? '
' তো অন্য কারো মনে হয়? '
' না! কিন্তু আমার তো একার না! '
' সেটা আমি বলিনি। '
' ও খেয়েছে। দশটার আগেই খেয়ে ঘুম। '
খাবার টেবিলে যা ছিল আমরা দুজন খেয়ে শেষ করে ফেললাম।
' তোমার ব্যবসা নিয়ে আমি কিছু জিজ্ঞেস করতে পারি? '
আমি জিজ্ঞেস করলাম।
সে মুখের উপর মানা করে দিল, না! তোমার এই বিষয়ে কোনো ধারণা নাই!
' আচ্ছা! তবে কেন মন খারাপ তা তো জিজ্ঞেস করতে পারি? '
' আমার মন খারাপ সেটা যে আপনি বুঝতে পেরেছেন। আমি ধন্য হয়ে গেলাম। কিন্তু আমার মন খারাপের কারণটা আপনি জানেন। '
আমি জানি না।
আমি সাদাসিধে মানুষ। কথা বলি হিসেব করে। দুয়েকদিনের ভেতরে কোনো ভুল করেছি বলে তো মনে হয় না।
গরমের দিন।
পাখা ছেড়ে দিয়ে আমরা পাতলা কম্বল গায়ে দিয়ে শুই। সকালে একবার সে বিছানা ছেড়ে দিল। ভাবলাম ছটার আগেই বুঝি কোথাও যাবে। না, সে পাঁচ মিনিট পরে এসে এমনভাবে আমাকে জড়িয়ে ধরল! আমার মনে হলো কম্বলটার আর দরকার নেই।
কিন্তু হঠাৎ এত উষ্ণতার ব্যাখ্যা বুঝতে পারলাম না। জিজ্ঞেসও করলাম না। তাহলে ভাববে ভালোবাসায় সন্দেহ করছি! কিছুক্ষণ পর সে বলল, তুমি আমায় এত ভালোবাসো? আমি কখনো বুঝতে পারিনি!
ভালো তো আমি বাসিই। এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু সে কী দেখে হঠাৎ আবিষ্কার করল আমি এত ভালোবাসি! এটাও জিজ্ঞেস করলাম না। জিজ্ঞেস করে আর পরিবেশ নষ্ট করতে চাই না।
এভাবে সকাল দশটা বেজে গেল।
খাবার টেবিলে গিয়ে দেখলাম একটা বড়ো বাক্স। জিজ্ঞেস করার আগেই ঊর্মিলা বলল, তোমার জন্য এনেছি। ভেতরে কী আছে সেটা বলব না। আমি যাওয়ার পরে খুলে দেখবে।
' আচ্ছা! '
এই মেয়ে এমনি এমনি কিছু দেয় না। বিনিময়ে বিশিষ্ট। ব্যবসায়ী বলে কথা। আমি কী দিলাম যে সে এর বিপরীতে এত বড়ো একটা বাক্সে করে উপহার আনলো! আমি এবার জিজ্ঞেস না করে পারলাম না।
আমার উত্তরে সে বলল, আজকে যে আমার জন্মদিন। তুমি সেটা মনে রেখেছ। এবং সুন্দর একটি উপহার দিয়েছ।
অনেকেরই বিশেষ দিন ভুলে যাওয়ার রোগ আছে। আমিও সেই রোগের রুগী। আমার মনে ছিল না কিছুই!
' তোমার জন্মদিন আজকে? '
ঊর্মিলা হেসে বলল, আর ভান করো না। তোমার আঁকা ছবিটা আমি দেখে ফেলেছি। ছবিটা খুব ভালো হয়েছে। সত্যিই, বলতে হবে তোমার হাতটা খুবই পাকা। ছবিটায় স্পষ্ট আমার কলেজে থাকাকালীন মুখটা ভেসে উঠছে!
আমি মাথায় হাত দিয়ে ভাবছি, হায় হায়! সেই মেয়ের ছবিটা ঊর্মিলা নিজের মনে করছে! অনেক দিন পরে ঊর্মিলাকে এত খুশি দেখছি। বলতেও ইচ্ছে করছে না এটা অন্য কারো জন্য এঁকেছি!
ঊর্মিলা আবার বলল, মাথায় হাত দেওয়ার কিছু নাই। আচ্ছা তুমি এমন লজ্জা পাও কেন বলো তো? তুমি তো মেয়ে মানুষ না। তোমার এত লজ্জা মানায় না। আসলে আমি বুঝতে পেরেছি। তুমি যতটা প্রকাশ করো। তারচেয়ে অনেক বেশি আমাকে ভালোবাসো। ঠিক না?
আমার মাথা নাড়ানো ছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই।
খাবার টেবিলে বসে আবার ঊর্মিলা বলল, অনেক দিন কাউকে নিজের হাতে তুলে খাওয়াই না! মাতৃকাও বড়ো হয়ে গেছে। নিজের হাতেই খায়। আচ্ছা হা করো। তোমাকে আজকে তুলে খাওয়াই।
আর যাই হোক, এমন করে বলল তো না বলা যায় না।
কিন্তু আমার ভেতরে ভেতরে অস্থিরতা কাজ করছে। এই বুঝি মেয়েটা নিজের ছবি নিতে হাজির হলো!
দুলঙ্কা (কিশোরগঞ্জের ভাষায়) আমার মুখে তুলে দিতে না দিতেই মেয়েটা হাজির! তাঁর প্রথম কথাই, আংকেল, আমার ছবিটা রেডি?
ঊর্মিলা বলল, কীসের ছবি?
' আপনি কি আন্টি? '
' জি, আমি আন্টি। '
' ওহ, আন্টি উনাকে ছবি আঁকতে বলেছিলাম। আজকে দেবার কথা। '
ঊর্মিলা আমার দিকে একবার তাকাল। যেন মেয়েটা না থাকলে এখনি গলা চেপে ধরে!
' ওহ! আপনার ছবিটা রেডি আছে। এনে দিচ্ছি। আপনি বসুন। '
হাত ধুয়ে ঊর্মিলা ছবিটা এনে মেয়েটাকে দিল। মেয়েটা হাতে ছবিটা নিয়ে বলল, খুব সুন্দর হয়েছে আংকেল। আবার আসব হয়তো অন্য কারো ছবি নিয়ে। ভালো থাকবেন। আমি আসছি।
মেয়েটা চলে যেতেই ঊর্মিলা দরজা লাগিয়ে দিয়ে এসে আমার গলা চেপে ধরে বলল, *** তুই আমার ফিলিংসে পানি ঢেলে দিলি!
আমি কোনোরকম বললাম, এটা তো আমার কোনো দোষ না! মেয়েটার চেহারা তোমার সাথে মিলে!
বলতে না বলতেই মাতৃকা নিজের রুম থেকে বেরিয়ে এসে বলল, মা! সকাল সকাল কী শুরু করেছ! আর তুমি বাবার গলায় ধরে আছ কেন?
মুহূর্তেই ঊর্মিলা মেঘনাদ মুখটাকে চাঁদের আলোয় পরিবর্তন করে ফেলল। সুন্দর এক হাসি দিয়ে বলল, কিছুনা মা! তোমার বাবার ঠান্ডা লেগেছে। তাই গলায় মালিশ করে দিচ্ছি!